নিরাপত্তা ঘাটতির কারণেই আঘাতের তীব্রতা বেশি
রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের (বিআরটি) গার্ডার ভেঙে চীনা নাগরিকসহ ছয়জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা স্থিতিশীল। বাকি একজনের শারিরীক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রকল্পের বিমানবন্দর অংশের কাজ করা কর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতি থাকায় দুর্ঘটনায় তারা গুরুতর আহত হয়েছেন। তবে বিআরটি কর্তৃপক্ষ বলছে, ঠিক কি কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে এ বিষয়ে তারা এখনও নিশ্চিত নয়। কোন জায়গায় ত্রুটি থাকার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে এবং কর্মীরা আহত হয়েছেন তাও তদন্ত করে দেখা হবে।
কুর্মিটোলা ফায়ার সার্ভিস অফিসের কুর্মিটোলা ফায়ার সার্ভিস অফিস শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এসে ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এখানে আমরা কোনো আহত ব্যক্তি পাইনি। আহতদের এভারকেয়ার হাসপাতাল ও পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে আমরা জেনেছি।
এ বিষয়ে সাইফুল নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিমানবন্দরে রেলওয়ে স্টেশনের পাশের ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় বিকট শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে আসি। দেখি লাঞ্চিং গার্ডারটি ভেঙে পড়ে আছে এবং রাস্তা আনুমানিক ১০-১৫ জন কর্মী আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন। কারো মাথা ফেটে গেছে কারো মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে আবার কেউ হাতে পায়ে ব্যথা পেয়েছেন। পরে গুরুতর আহত ছয়জনকে পুলিশের সহায়তায় গাড়িতে তুলে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আহত কর্মীদের অনেকের মাথায় হেলমেট ছিল না। এছাড়া অনেকের কোমরে নিরাপত্তা ব্যালটও ছিল না। দেখে বুঝা গেছে, প্রকল্পে কাজ করা কর্মীরা যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে স্প্যান বসানোর কাজ করছিলেন না। ফলে লঞ্চিং গার্ডটি ভেঙে পড়ায় তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, স্প্যান বসানোর সময় এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আহত যারা ছিলেন তাদের উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
তিনি বলেন, মনিটরিং টিমের কোনো গাফিলতি আছে কিনা সে বিষয়টা তদন্ত করে দেখতে হবে। তবে মনিটরিং সব সময় থাকেন না। স্পটে আমাদের একজন লোক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী যদি তারা কোনো ক্ষতিপূরণ পান তাহলে আমরা অবশ্যই দেব।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। আমাদের রেস্কিউ টিম বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, স্প্যান বসানোর সময় লাঞ্চিং গার্ডার একপাশে কাত হয়ে পড়ে যায়। এতে আঘাত পেয়ে ছয়জন গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে তিনজন চীনের নাগরিক ও তিনজন বাংলাদেশি।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির ঢাকা পোস্টকে বলেন, আহতদের মধ্যে তিনজন চীনা নাগরিক, বাকিরা বাংলাদেশি। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এমএসি/এসকেডি