করোনায় মারা গেলেন এমপি মাহমুদ উস সামাদ
সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মৃত্যুর খবরটি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত সচিব জুলহাস আহমদ। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তিনি স্ত্রী ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এ কারণে গত রোববার (৭ মার্চ) কোনো ধরনের অনুষ্ঠানে তিনি যাননি। ওইদিন ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিতে প্লেনে ওঠার সময় হাঁপিয়ে পড়েন এবং প্লেনে অসুস্থ অনুভব করায় সেখান থেকে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি হন।
এর আগে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত সচিব জুলহাস আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোববার রাতেই তাকে (মাহমুদ উস সামাদ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। বিকেলে তার ফলাফল পজিটিভ আসে। বর্তমানে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি।
তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জানা গেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে এই সংসদ সদস্য করোনার টিকা নিয়েছিলেন। তারপর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না। কয়েক দিন আগে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে গিয়েছিলেন তিনি।
মাহমুদ উস সামাদের মরদেহ শুক্রবার যাচ্ছে ফেঞ্চুগঞ্জে
সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের মরদেহ শুক্রবার (১২ মার্চ) বেলা ১১টায় হেলিকপ্টারে করে ফেঞ্চুগঞ্জে তার বাড়িতে নেওয়া হবে। একই দিন বাদ আসর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও এই সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
টানা তিনবার জয়ী হয়েছিলেন কয়েস
দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নিয়ে সিলেট-৩ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয়ী হন। তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিও ছিলেন।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েস নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৯৭ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে জয়ী হন। ১৯৯৬ সালে সপ্তম ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েস ভোটযুদ্ধে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
এক শোক বার্তায় ড. মোমেন বলেন, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী অত্যন্ত দৃঢ়চিত্তের অধিকারী ছিলেন। তার মৃত্যুতে জাতি একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদকে হারাল। তার মৃত্যু সিলেটের জনগণের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
সাবেক অর্থমন্ত্রীর শোক
সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসকে একজন স্বজ্জন রাজনৈতিক নেতা ও সফল সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে আখ্যায়িত করে শোক বার্তায় তিনি বলেন, সবসময় তার মিষ্টভাষী আচরণ সবাইকে সহজে মুগ্ধ করে তুলত।
পিএসডি/জেডএস/এমএমজে