হাতিরঝিলজুড়ে বিজয়ের উৎসব
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আনন্দ-উৎসবে মেতেছে পুরো বাংলাদেশ। অলিগলি থেকে রাজপথ, প্যারেড গ্র্যাউন্ড, পার্ক-বিনোদন কেন্দ্রসহ সব জায়গাতেই যেন লেগে আছে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস। শত মানুষের ভিড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে বিজয়োল্লাস। বাড়ি, গাড়িসহ সরকারি-বেসরকারি ভবনেও দেখা গেছে লাল-সবুজের পতাকা।
এমন উৎসবমুখর বর্ণিল আয়োজনে বাদ যায়নি রাজধানীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হাতিরঝিলও। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বিজয়ের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশে।
এ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে কেউ এসেছে পরিবার, স্ত্রী সন্তান নিয়ে, কেউবা বন্ধু বা প্রিয়জনকে নিয়ে। ছোট থেকে মাঝ বয়সী অনেকেই মাথায় পড়েছেন পতাকার ব্যান্ড, কেউ কেউ রাঙিয়েছেন হাত বা গালে বিজয়ের বার্তা।
সকাল থেকেই হকারদের হাতে হাতে দেখা গেছে পতাকা, বেলুন, পতুল, বাঁশি আর খেলনা। এছাড়াও ছোট-বড় রেস্টুরেন্টগুলোতেও মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বিজয় উল্লাসের দিনে এমনভাবেই ছেয়ে আছে রাজধানীর অন্যতম এ বিনোদন কেন্দ্রটি।
পাঁচ বন্ধুদের সাথে বিকেলে হাতিরঝিলে এসেছেন রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নূসরাত ফারজানা। তিনি বলেন, অন্য সব দিন ক্লাস-পরীক্ষা লেগেই থেকে। আজ আমাদের বিজয় দিবস, তাই লাল সবুজের শাড়ি পড়ে হাতিরঝিলে বিজয় দিবস উদযাপন করতে এসেছি। তবে এখানে মানুষ আর মানুষ, যেখানে পা ফেলার জায়াগা নেই।
এদিকে স্ত্রীসহ মেয়ে ফাইজাকে নিয়ে এসেছেন আহসান হাবিব শাওন। তিনি বলেন, যান্ত্রিকতার এ শহরে প্রতি দিনই কাটে ব্যস্ততায়। এর মাঝে পরিবারকে সময় দেওয়া কষ্টসাধ্য। তাই আজ এ ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে বের হয়েছি।
হাতিরঝিলের তিতাস রোডের মোড়ে চটপটি বিক্রেতা হামিদুর রহমান বলেন, এখানে অন্যান্য ছুটির দিনেও মানুষের প্রচুর ভিড় হয়। তবে আজ তুলনামুলকভাবে ভিড় বেশি।
অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ করেছে হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি। বিশেষ দিবসটি উপলক্ষে যাত্রী পারাপার বন্ধ রেখে ৩০ মিনিটের নৌ ভ্রমণ প্যাকেজ চালু করেছে হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সি কর্তৃপক্ষ। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যাত্রী পারাপার বন্ধ রেখে হাতিরঝিল পানি পথ ঘুরার প্যাকেজ চালু করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৩০ মিনিটের জন্য জনপ্রতি ৮০ টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙে গ্রহণ করে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ। এ দিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় এ বিজয়।
এএসএস/এফকে