পাপুল পরিবারের ৬১৩ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের নামে ৬১৩ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা অবরুদ্ধে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আদালতের অনুমতি নিয়ে বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন সই করা চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর পাঠানো হয়েছে। কমিশনের জনসংযোগ দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে আদালত থেকে অনুমতি পায় দুদক। চিঠিতে এমপি পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের নামে থাকা হিসাবের নিয়ে ৮ ব্যাংকের এমডিকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে তাদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানের মোট ৩০.২৭ একর জমি ও গুলশানের ফ্ল্যাট এটাচমেন্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
এর আগে ১১ নভেম্বর এমপি কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল এবং স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এবং মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধানের পাঁচ হিসাবের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত লন্ডারিং হয় ১৪৮ কোটি টাকা। অথচ ২৩ বছর বয়সী জেসমিনে নিজের কোনো আয়ের উৎস নেই।
অন্যদিকে এফডিআর হিসাবের দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার কোনো উৎস শ্যালিকা জেসমিন দাখিল করতে পারেননি। যে কারণে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এবং মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা ভোগ দখলে রাখার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ এবং প্রায় ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয় এজাহারে।
অর্থ ও মানবপাচার এবং ভিসা বিক্রির অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার পাপুল ও তার কুয়েতি প্রতিষ্ঠানের মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৭ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ টাকা) জব্দের খবর বের হয়।
৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পাপুলকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে দেশটিতে মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
আরএম/এসএম