রেজাল্টের পরও মিষ্টি বিক্রির ধুম নেই, হতাশ দোকানিরা
‘এখন আর আগের মতো রেজাল্টের আমেজ নেই৷ করোনার পরে সবকিছুই পাল্টে গেছে। আগে রেজাল্ট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাত পর্যন্ত মিষ্টির দোকানে ভিড় লেগে থাকত। অভিভাবকরা হাসিমুখে এসে কেজি কেজি মিষ্টি নিয়ে যেত। আমরাও আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে বেশি করে মিষ্টি বানাতাম। এখন আর তার ছিটেফোঁটাও নেই। রেজাল্টকে ঘিরে যে উৎসবের আমেজ তৈরি হতো সেটি হারিয়ে গেছে বললেও ভুল হবে না।’—এভাবেই বলছিলেন রাজধানীর ধানমন্ডির বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের ক্যাশিয়ার আব্দুস সালাম।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর মিষ্টি বিক্রির ব্যাপারে ব্যাপক আশাবাদী ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, মনটাই খারাপ হয়ে গেছে। অন্যান্য দিনের মতোই মিষ্টি বিক্রি স্বাভাবিক রয়েছে। কয়েকবছর আগে রেজাল্ট ভালো হলে মিষ্টিমুখ করানোর জন্য যে উৎসবের আমেজ তৈরি হতো সেটি নেই।
একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন সায়েন্সল্যাব ও নিউমার্কেট এলাকার মিষ্টির দোকানিরা। বিকেলে নিউমার্কেটের নূর জাহান মার্কেট সংলগ্ন যাদব ঘোষ অ্যান্ড সন্স এবং মোহন চাঁন অ্যান্ড গ্র্যান্ড সন্স মিষ্টির দোকানে গিয়ে দেখা গেল, শুধুমাত্র ম্যানেজার এবং কর্মচারী বসে আছেন। দোকানে ভিড় দূরে থাক স্বাভাবিক বেচাকেনার নামগন্ধও নেই।
এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের পর মিষ্টির বিক্রি বেড়েছে কী না? জানতে চাইলে যাদব ঘোষ অ্যান্ড সন্স মিষ্টি দোকানের
বিক্রেতা সুমন বলেন, বিক্রি বাড়েনি বরং অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকের বিক্রির পরিমাণ কম। সবচেয়ে বড় কথা হলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কারণে মানুষ মিষ্টি কেনা কমিয়ে দিয়েছে। সব উপকরণের দামই বেশি। যে কারণে মিষ্টি ও মিষ্টিজাত পণ্যের দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি বাড়াতে হয়েছে। আমার দোকানে সর্বনিম্ন মিষ্টির কেজি শুরু হয়েছে ২৮০ টাকায়। এত টাকা দিয়ে মিষ্টি কিনে খাওয়ার সামর্থ্য এখন অনেক মানুষেরই নেই।
অতিরিক্ত মিষ্টি বানানো হয়েছিল কী না জানতে চাইলে মোহন চাঁন অ্যান্ড গ্র্যান্ড সন্স দোকানের বিক্রেতা রাসেল বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ফল প্রকাশের পর মিষ্টি কেনার তেমন আমেজ দেখা যায় না। অতিরিক্ত মিষ্টি তৈরি করলে পরে ঝামেলায় পড়তে হয়। তাই এখন আর অতিরিক্ত মিষ্টি তৈরি করি না। স্বাভাবিক সময়ের মতোই মিষ্টি তৈরি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আজ বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এসএসসির ফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ফল ঘোষণা করেন। এ বছর নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট ২০ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। সাধারণ নয়টি বোর্ডে পাসের হার ৮৮.১০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৬৩ জন।
দাখিলে পাসের হার ৮২.২২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ৪৫৭ জন। কারিগরিতে পাসের হার ৮৯.৫৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৬৫৫ জন।
আরএইচটি/কেএ