ম্যাজিস্ট্রেট দেখে ‘অভিযান, অভিযান’ বলে চিৎকার
ক্রেতা সাধারণের সরব উপস্থিতি ও ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে জমজমাট কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেট। বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করছিলেন দোকানদাররা। কিন্তু সবকিছুর ছন্দপতন ঘটিয়ে হঠাৎ মার্কেটটিতে প্রবেশ করলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সঠিকভাবে কেউ জানেন না ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান আসলে কাদের বিরুদ্ধে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট দেখে এক দোকানি হঠাৎ ‘অভিযান, অভিযান’ বলে চিৎকার দিয়ে উঠেন। তার চিৎকারে কোনো কিছু না বুঝে তাৎক্ষণিকভাবে অবৈধ পলিথিন সারানো ও দোকান বন্ধের চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের কারণে এতে সফল হননি তারা।
ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ দেখে চিৎকার করা ওই ব্যক্তির নাম হাবিবুর রহমান। তিনি হাবিব জেনারেল স্টোরের মালিক। চিৎকার করে চারদিকে খবর পৌঁছে দেওয়ায় তাকে আটকের নির্দেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আটকের পর নিজের দোষ স্বীকার করে হাবিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র্যাব দেখে আমি ভয় পেয়েছিলাম। তাই চিৎকার করে বলেছি, ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানে এসেছে। ম্যাজিস্ট্রেট বলছেন- আমি নাকি চিৎকার দিয়ে সবাইকে অভিযানের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। সে কারণে আমাকে আটক করা হয়েছে। আমি উনাদের বলেছি আমার ভুল হয়েছে, এমন আর হবে না।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকালে থেকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে ক্ষতিকর অবৈধ পলিথিন নির্মূলে অভিযান পরিচালনা করছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ক্ষতিকর পলিথিনগুলো জব্দের পাশাপাশি জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে।
অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ। তাকে সহযোগীতা করছেন অধিদপ্তরের পরিদর্শক (মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেমেন্ট উইং) রিয়াজুল ইসলাম।
অভিযান প্রসঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ বলেন, অবৈধ ক্ষতিকর পলিথিন নির্মূল করার লক্ষ্যেই মূলত আমাদের এই অভিযান। বেশ কিছু দোকানে এসব পলিথিন আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। সেগুলো জব্দ করা হয়েছে। আমাদের অভিযান দিনব্যাপী অব্যাহত থাকবে।
সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানাতে গিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক (মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেমেন্ট উইং) রিয়াজুল ইসলাম বলেন, যেসব পলিথিন পরিবেশের জন্য বেশি ক্ষতিকর অর্থাৎ যেগুলো পাতলা ৫৫ মাইক্রোর নিচে, সেগুলো আমরা জব্দ করছি। কোম্পানির সিল ছাড়া খোলা বাজারে বেশি ক্ষতিকারক পলিথিন বিক্রি করা নিষিদ্ধ। মূলত এ বিষয়গুলো মনিটরিং করতে এই অভিযান চলছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার কেজিরও বেশি পলিথিন আমরা জব্দ করেছি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এএসএস/এমএইচএস