ধূমপান নিয়ন্ত্রণে বেশি বেশি মৌলিক গবেষণা প্রয়োজন
বাংলাদেশে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বেশি বেশি মৌলিক গবেষণা জরুরি বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ও ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ এর তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কার্যক্রম বিষয়ে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ও পার্লামেন্টারি ফোরামের মাধ্যমে কীভাবে সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সাথে কাজ করছে ও নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ভূমিকা রাখছে সে বিষয়গুলো উঠে আসে। বিশেষত চলতি বছরের মে মাসে কক্সবাজারে ৪০ জন সংসদ সদস্যের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন’ শীর্ষক কনফারেন্স ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ১৫২ জন সংসদ সদস্যের সুপারিশের বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়।
সংসদ সদস্যদের এসব উদ্যোগ ও দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আন্দোলনের সাথে একমত প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং-এর মাধ্যমে সংসদ সদস্যরা ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা প্রশংসনীয়। বিশেষ করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও ই-সিগারেট বন্ধে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আইন সংশোধনের সুপারিশে ১৫২ জন সংসদ সদস্যের চিঠি উৎসাহব্যঞ্জক। তবে বাংলাদেশে তামাক ও ধূমপানজনিত কারণে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র আরও স্বচ্ছভাবে তুলে ধরতে মৌলিক গবেষণা প্রয়োজন। বিশেষ করে কত শতাংশ তরুণ, কত শতাংশ বয়োজ্যেষ্ঠ এবং কত শতাংশ নারী তামাক ব্যবহার করেন এ সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা প্রয়োজন। একই সাথে বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার প্রতি বছর কী পরিমাণ হারে কমছে তারও একটা পরিসংখ্য্যান থাকা দরকার। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও গবেষণা হওয়া দরকার। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন, যা উন্নত দেশগুলোতে হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে। তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। ধূমপান নিয়ন্ত্রণে ৬টি বিষয় নিয়ে কাজ করছে পার্লামেন্টারি ফোরামের সদস্যরা। এগুলো হলো- সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং ট্যোব্যাকো প্রোডক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা এবং বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধ করা।
এনএফ