মধ্যরাতে লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ
গত কয়েক দিন ধরে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে চরম মাত্রায় লোডশেডিং চলছে। বিদ্যুতের আসা-যাওয়া খেলায় অতিষ্ঠ মানুষ। দিন রাতের ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে লোডশেডিং নগরবাসীর ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।
এমনিতেই সকাল থেকে রাত অবধি কয়েক দফায় লোডশেডিং হয়। তার ওপর নতুন করে যুক্ত হয়েছে ভোর বেলা লোডশেডিং। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল সমালোচনা।
গত জুলাই মাস থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে শুরু হওয়া বিদ্যুতের লোডশেডিং সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে কিছুটা কমতে শুরু করে। তবে গত মঙ্গলবার জাতীয় গ্রিডে সমস্যা দেখা দেওয়ায় কয়েক ঘণ্টার জন্য হঠাৎ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা। এরপর থেকেই সকাল দুপুর, বিকেলে, সন্ধ্যা, রাতে ঘন ঘন লোডশেডিং দেখা দিয়েছে দেশজুড়ে। সবচেয়ে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মধ্যরাতের লোডশেডিং।
আরও পড়ুন : এখন পর্যন্ত মানবসৃষ্ট কোনো গাফিলতি খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি
সাইফুদ্দিন রবিন নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী টাইমলাইনে লিখেছেন, বিদ্যুতের সংকট যে কতটা তীব্র, তা মফস্বলে আরও আগে থেকেই স্পষ্ট। রাজধানীতে কয়েক দিন আগেও যে এলাকায় লোডশেডিং দিনে সর্বোচ্চ ২ বার (কখনো একবার) হতো, সেখানে সপ্তাহখানেক ধরে নিয়ম করে ২৪ ঘণ্টায় ৫-৬ বার হয়। তাও কমপক্ষে এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। এই মধ্যরাতে পঞ্চম বারের মতো বিদ্যুৎহীন আমার এলাকা। আর ভোর রাত মানে ৪-৫টার দিকে শিডিউল লোডশেডিং তো হয়ই।
জাইফ জাফর রিজভী নামে একজন লিখেছেন, ‘ভোর ৬টা, সকাল ১১টা, বিকেল ৫টা, রাত ১২টা, রাত ২টা! লোডশেডিং। রাতে ঘুমাতে দেন না, ইন্টারনেটও অফ করবেন, বিদ্যুৎ থাকবে না তবুও বিল বাড়াবেন! মানে সব খালি বাড়বেই! বাড়াচ্ছেন তো বাড়াচ্ছেন! থামাথামি নেই! তো একটু তো ভালো কাজে সময়টাকে লাগান! বাঁচতে তো দিন!’
রাজধানীর মালিবাগ এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম পাশের চায়ের দোকানে বসে অন্যদের সমালোচনার সঙ্গে নিজেও যুক্ত হয়ে বলেন, ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে নিয়মিত লোডশেডিং হচ্ছিল। তা আমরা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে লোডশেডিং আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। দিন রাত মিলে ৫-৬ বার বিদ্যুৎ যায়। একবার গেলে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এখন আরও বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে মধ্যরাতে ২/৩ বার করে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, এটা খুবই বিরক্তিকর।
আরও পড়ুন : মূল সংকট কেটে গেছে, ধীরে ধীরে লোড বাড়ানো হচ্ছে : প্রতিমন্ত্রী
মধ্যরাতে লোডশেডিংয়ের বিষয়ে কথা বলতে রাজধানীতে বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ানকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে ডিপিডিসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের আওতাধীন এলাকাতে বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। সরকারি ছুটির দিনে ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। অথচ আমরা পাচ্ছি ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। ফলে কিছুটা লোডশেডিং হচ্ছে। এছাড়াও ডেসকোতেও কয়েকশত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকছে। ফলে রাজধানীজুড়ে এমন লোডশেডিং হচ্ছে। আশা করা যায়, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এএসএস/এসকেডি