পূজা উপলক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই : সিএমপি কমিশনার
পূজা উপলক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই জানিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেছেন, পূজা মণ্ডপে কেউ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপের প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
সিএমপি কমিশনার বলেন, আইনের হাত অনেক লম্বা। কেউ কেউ হয়তো, কোনো কোনো সময় কিছু একটা কাজ করে আমাদের বিভ্রান্ত করছে, অস্বস্তিতে ফেলছে। আইনের চূড়ান্ত বিচারে অবশ্যই তারা পরাজিত হবেন। অতীতের ঘটনা নিয়ে আইনগতভাবে যেভাবে এগোনো দরকার সেভাবেই এগোচ্ছি। পুলিশের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা দিতে চাই, কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টের জন্য কোনো কার্যক্রম বা ষড়যন্ত্র করলে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে, কোন ছাড় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি আমি বিশ্বাস করি, অসাম্প্রদায়িক শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ বিষয়গুলো যদি তারা আমলে নেয়, সবসময় সতর্ক থাকে, তাহলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্ট করার জন্য যারা পাঁয়তারা করে গুটি কয়েক লোক তারা কখন সফল হতে পারবে না।
তিনি বলেন, পূজা উপলক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই। তবে প্রতিটি নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই আমরা প্রত্যাশা করি ভালো হবে। কিন্তু আমরা যে কোনো খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি রাখি।
গতবার জেএমসন হলে হামলায় জড়িত ৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বর্তমানে তারা জামিনে চলে এসেছে। পূজা উদযাপন পরিষদ এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সিএমপি কমিশনার বলেন, যারা জামিন নিয়ে বের হয়ে এসেছেন তাদের প্রতি আমাদের নজরদারি আছে। মামলাটির শিগগিরই চার্জশিট দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, মহানগরীতে ২৬৬টি পূজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপ ঘিরেই চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমদের সাদা পােশাকে পুলিশ, বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও সোয়াটের বিশেষায়িত টিমও কাজ করবে। কিছু মণ্ডপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। আর কিছু মণ্ডপ সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেই ভাবেই স্থাপন করা হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, পূজা মণ্ডপে নারী-পুরুষের প্রবেশের জন্য আলাদা প্রবেশ পথ রাখতে বলছি প্রতিটি মণ্ডপে দায়িত্বপ্রাপ্তদের। সিসি টিভি ক্যামেরার ও পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখার জন্যও বলা হয়েছে। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে বলেছি। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দারাও কাজ করে তথ্য সংরক্ষণ করবে।
তিনি বলেন, প্রতিমা বির্সজনের জন্য নয়টি জায়গা নির্ধারিত রয়েছে। বিসর্জনের জন্য আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আয়োজকদের অনুরোধ করেছি, প্রতিমা বিসর্জনের কার্যক্রম সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করতে। নগরবাসী শারদীয় দুর্গাউৎসব অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে সহযোগিতা করছেন। প্রতিটি উৎসবে চট্টগ্রামের মানুষজন অসাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করে থাকেন, সেটা অব্যাহত থাকবে। সবার সঙ্গে মিলে এই উৎসবকে সার্বজনীন একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন করতে চাই।
কেএম/এসএম