চাকরি স্থায়ীকরণ ও বেতন বৃদ্ধির দাবি হরিজন সম্প্রদায়ের
সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় কর্মরত হরিজন সম্প্রদায়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণ ও বেতন বৃদ্ধিসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে হরিজন ঐক্য পরিষদের মহাসচিব নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, হরিজন সম্প্রদায় সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার প্রথম কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও আমাদের চাকরি আজও অস্থায়ী। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদের চাকরি স্থায়ীকরণ করতে হবে এবং সকল ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং বা ঠিকাদার কর্তৃক নিয়োগ, অনিয়ম ও বাণিজ্য বন্ধ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ঝাড়ুদার/ ক্লিনার/ সুইপার (পরিচ্ছন্নতাকর্মী) পদে ৮০% কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ২০তম গ্রেডের পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদের পদোন্নতি দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের বেতন কাঠামো ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা যা দিয়ে একটি পরিবার কোনোভাবেই চলতে পারে না। বর্তমান বাজারের মূল্য বৃদ্ধি বিবেচনা করে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সর্বনিম্ন বেতন ২২ হাজার টাকা দিতে হবে। মূল বেতনের সমপরিমাণ দুটি উৎসব ভাতা দিতে হবে। হরিজনদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য স্বাস্থ্য বিমা চালু করতে হবে।
হরিজন ঐক্য পরিষদের অন্য দাবিগুলো হলো,
সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হরিজনদের জন্য ভর্তি কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। সরকারি চাকরিতে অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে নিয়োগে কোটা দিতে হবে; হরিজনদের খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে নিজস্ব আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; বৈষম্য বন্ধে সংসদে ‘বৈষম্য নিরোধ আইন’ পাস করাসহ ‘হরিজন কল্যাণ ট্রাস্ট’ গঠন করতে হবে; সকল স্থানীয় সরকারসহ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে হরিজনদের জন্য আসন সংরক্ষণ করতে হবে; ফুটবল, ক্রিকেট ও অলিম্পিক গেইমে যোগ্যতা অনুযায়ী অংশগ্রহণে সুযোগ সৃষ্টিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, বাংলাদেশে বসবাসরত এক বিশাল জনগোষ্ঠী যারা হরিজন নামে পরিচিত, তারা পেশাগত কারণে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বহুমুখী ঘৃণিত হচ্ছে, বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার। অথচ তারা আমাদের সেবা দিয়ে আসছে। আমি এই পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন করছি। আমরা তাদের প্রতি চিরতরে ঘৃণা-বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি কৃষ্ণলালসহ হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
আইবি/এসকেডি