৬০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি
বাজারে সবজির অভাব নেই। কিন্তু পেঁপে আর মিষ্টি কুমড়া বাদে বাজারে কোনো সবজি নেই যেটার দাম ৬০ টাকার নিচে।
কথাগুলো বলছিলেন শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর উত্তর পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা শিপন মিয়া। এই বাজারে একটু ঘুরতেই তার কথার সত্যতাও মেলে।
বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ সবজির দামই বেড়েছে। কাঁচা মরিচের ঝাঁজ কমলেও কমেনি গাজর ও টমেটোর দাম। টমেটো ১৪০ টাকা ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আর আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। সবজির বাজারে ক্রেতাদের মুখে অসন্তোষ স্পষ্ট।
বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম বাড়ার স্পষ্ট কারণ জানা নেই। অধিকাংশ সবজির দামই গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
সবজি বিক্রেতা সেলিম মিয়া বলেন, বেগুন গত সপ্তাহে কিনেছি ৬৫ টাকায়। আজ তা কিনতে হয়েছে ৭৫ টাকায়। বিক্রি তো ৮০ টাকার নিচে করা যাচ্ছে না। গোল বেগুন ৯০, লম্বা বেগুন ৮০ টাকায় বেচতে হচ্ছে।
গত সপ্তাহেও ঢেড়স ছিল ৫০ টাকা, আজ তা ৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কাকরোলে কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। গত সপ্তাহেও যা ছিল ৫০ টাকা, আজ ৭০, শশা ৬০ টাকা কেজি।
• আরও পড়ুন : চাল-ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর সুপারিশ
বাজার ঘুরে দেখা যায়, লাউ ৫০ থেকে ৬০, কচুর লতি ৬০ টাকা, ১০ টাকা বাড়তিতে করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ছোট পাতা কপির পিস ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০, চিচিঙ্গা ৭০, পটল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা। এসব সবজি গত সপ্তাহে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে পাওয়া গেছে। তবে শুধু পেঁপেই মিলছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
জাহিদুল ইসলাম নামে একজন ক্রেতা বলেন, বাড়তে সময় লাগে না, কিন্তু বেড়ে গেলে যেন আর কমে না সবজির দাম। আমাদের মতো মধ্যবিত্তের ৬ সদস্যের পরিবারের জন্য সবজির জন্য খরচা বেড়ে গেছে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।
শাকের দামও বেড়েছে। পাট শাকের জোড়া আঁটি ২৫ টাকা, কলমি শাক জোড়া আঁটি ২০ টাকা, কচুর শাক দুই আঁটি ২০ টাকা, মূলার শাক দুই আঁটি ৩০ টাকা, লাল শাকের জোড়া আঁটি ৩০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা, শাপলা ডাটা ১৫ টাকা। আর ধনিয়ার পাতা ১০০ গ্রাম ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। লেবুর হালি ১৫ থেকে ২০ টাকায় মিলছে।
নিম্ন আয়ের মানুষের পছন্দের লাউয়ের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা। জালি কুমড়া ৪০ টাকা পিস।
• আরও পড়ুন : চলতি অর্থবছরে ৬.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির
সবজি বিক্রেতা আলমগীর বলেন, টমেটো ও গাজরের দাম শুনে অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন। যারা কিনছেন তারাও অল্প করে কিনছেন। গাজর ও টমেটো বাজারে নেই। হাইব্রিড দুই সবজি আমদানি করায় খরচা বেশি।
বাজার করতে আসা উজ্জ্বল মিয়া বলছেন, সামর্থ্যের মধ্যে রয়েছে কেবল কিছু শাক ও পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া আর মরিচ। লাউয়ের দামও বাড়তি। আলুও ৩৫ টাকা। বাকি সবই ৬০ টাকার ওপরে। ২০০ টাকার সবজি কিনলে দু’দিন যায় না ফিরতে হয় ফের সবজির বাজারে।
সবজি বিক্রেতা নূর হোসেন বলেন, সবজির বাজারে কোনো সরকারি মনিটরিং নেই। যে যেমন পারছেন দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতেছেন। আমরা খুচরা বেচি। পাইকারিতেই যদি বাড়তি দাম কিনতে হয় তাহলে তো লোকসান করে খুচরায় সবজি বিক্রি করা যায় না।
জেইউ/এনএফ