পুলিশের সমালোচনাকারীদের মুখে ছাই পড়ুক: আইজিপি
যারা পুলিশের সমালোচনা করে তাদের মুখে ছাই পড়ুক বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২১ উপলক্ষে পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং স্বীকৃতি স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
সোমবার (০১ মার্চ) সকালে মিরপুর-১৪ নম্বরে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন।
সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, কোনো দেশের সঙ্গে যখন যুদ্ধ লাগে তখন বিকল্প ফোর্স হিসেবে পুলিশ যুদ্ধ করে। আর শান্তির সময় দেশের মধ্যে দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে, বনশত্রুদের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের শত্রুদের বিরুদ্ধে এবং রাষ্ট্রকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ যুদ্ধ করে। এই যুদ্ধ ক্রমাগত, অবিরত ও অবিরাম। আর যুদ্ধ হলেই অবিরামভাবে আসে মৃত্যু। সে কারণে প্রতি বছর আমরা ডজন ডজন সহকর্মীকে হারাই। পুলিশে এই মৃত্যুর মিছিল, শাহাদৎবরণকারীদের মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।
আইজিপি বলেন, আমরা আর কোনো মৃত্যু দেখতে চাই না। আমাদের পরিবারও মৃত্যু দেখতে চায় না। কিন্তু তারপরও আমরা দেশের প্রয়োজনে যে শপথ নিয়েছি সে শপথের প্রয়োজনে, পেশাগত দায়িত্বের প্রয়োজনে, জনগণের প্রতি ভালোবাসা, দেশমাতৃকার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রয়োজনে আমাদের সহকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। এই করোনাকালেও পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার ৮৫ জন সদস্যকে আমরা হারিয়েছি। সেই সঙ্গে করোনাকালে প্রায় ২১ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, সুস্থ হয়েছেন এবং আবার সুস্থ হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
পুলিশ প্রধান বলেন, করোনাকালীন সময়ে কৃষকের ধানকাটাতেও সহায়তা করেছেন পুলিশ সদস্যরা। দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কৃষক খুঁজে পুলিশের গাড়িতে করে ধানকাটার জন্য পুলিশ সহায়তা করেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশ সম্মুখ সাঁড়িতে থেকে দায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশ পুলিশ তাদের দক্ষতা ও দৃঢ়তার যে সাক্ষ্য দিয়েছে তা দিয়ে তারা জনগণের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইজিপি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মেমোরিয়াল ডে'র সঙ্গে আরেকটি উৎসব উদযাপন করে সেটি হচ্ছে 'ব্লু রেবন ডে'। মূলত ওই দিন দেশবাসী পুলিশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ব্লু রেবন পুলিশকে পরিয়ে দেয়, নিজেরা গাড়িতে, বাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নীল রঙে সাজায়। আগামী বছর থেকে এই অনুষ্ঠানটি আমরা চালু করতে চাই।
প্রেসক্লাবের ঘটনাকে প্রসঙ্গ করে আইজিপি বলেন, পুলিশ কারো প্রতিপক্ষ নয়, তাহলে পুলিশকে কেন প্রতিপক্ষ বানানো হয়। এই প্রশ্ন শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশের মানুষের প্রতি। দেশের মধ্যে যে একটা ছোট অংশ আছে সেটা দেখলেই বোঝা যায়। কারণ দেশের কোনো ভালো কিছুর প্রতি তাদের আগ্রহ নেই, দেশের কোনো অর্জনে তাদের কিছু আসে যায় না। এই দেশের ভিন্ন সংস্কৃতির, ভিন্ন চেতনার মানুষগুলো আমাদের দেশের মানুষ হিসেবে দাবি করে। এই মানুষগুলোকে আমাদের দেশের বৃহত্তর জাতিসত্তা থেকে আলাদা করার সময় এসেছে। এরা আমাদের জাতির অংশ নয়।
ওই ছোট একটা গ্রুপ যারা দেশের ভালোকিছু দেখেন না এবং সমালোচনা করেন, তাদের এমনকি তারা পুলিশের সমালোচনা করেন তাদের মুখে ছাই পড়ুক। এ দেশের প্রকৃতিতে যারা বড় হয়ে ছুড়ি মারতে চায় তাদের মুখে আমরা দেশবাসী সবাজ মিলে ছাই ছুড়ে দিতে চাই, বলেন আইজিপি।
জেইউ/জেডএস