জ্বালানি সাশ্রয়-যানজট কমাতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান
বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস আজ (২২ সেপ্টেম্বর)। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে। ‘জ্বালানি ব্যবহার ও যানজট নিয়ন্ত্রণ করি, ব্যক্তিগত গাড়ি সীমিত রাখি’ শ্লোগানকে সামনে রেখে এ বছর সরকারি ও বেসরকারি ৬২টি সংস্থার সম্মিলিত উদ্যোগে দিবসটি উদযাপন করা হবে।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার নানান কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি জ্বালানি সাশ্রয়-যানজট নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানানো হয়েছে। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিকে ভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে সাইকেল র্যালি, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ : বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে করণীয়’ শীর্ষক লাইভ টক শো, ‘বসবাসযোগ্য ঢাকা : ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা, পার্কিংয়ের পরিবর্তে এলাকাভিত্তিক ছোট আকারের সামাজিকীকরণের সুযোগ গড়ে তোলার আহ্বানে সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন, মোহাম্মদিয়া হাউজিংয়ে কার ফ্রি স্ট্রীট ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার না করে বরং সাইকেল, হাঁটা বা গণপরিবহন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে ৭০’র দশকে ইউরোপে গাড়িমুক্ত দিবসের সূচনা হয়। ২০০৬ সাল থেকে দেশে বেসরকারি উদ্যোগে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। তবে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে এটি পালন শুরু হয়। এই দিবসের অঙ্গীকার অনুযায়ী ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত বা নিয়ন্ত্রিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তারা বলেন, বর্তমানে যানজটের কারণে প্রতিদিন লাখ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। জ্বালানির অপচয় হচ্ছে, বাড়ছে দূষণ। এ জন্য বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়ে থাকে। বর্তমানে ঢাকায় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করে। প্রতিদিন যোগ হচ্ছে প্রায় ৪০টি নতুন ব্যক্তিগত গাড়ি। এছাড়া মোটরসাইকেলের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটিও দুর্ঘটনা ও দূষণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তাই উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থার বিকল্প নেই।
ইতোমধ্যে মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট, বাস রুট ফ্রাঞ্চাইজ, প্রয়োজনীয় সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও মানসম্মত ফুটপাত তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ চলছে। পাশাপাশি পুরাতন যানবাহনের যথাযথ প্রক্রিয়ায় জীবনাবসানের জন্য ‘পুরাতন যানবাহন স্ক্র্যাপ গাইডলাইন’ এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এগুলো সম্পন্ন হলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যায়ক্রমে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সেজন্য এখন থেকেই নগরবাসীর নিকট বার্তা প্রদান করা দরকার। বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপনের মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করা সম্ভব, বলেন বক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (মাস ট্রানজিট) এ কে এম হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (টিএমপিটিআই) মোহাম্মদ রবিউল আলম, ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হায়দার কামরুজ্জামান প্রমুখ।
এএসএস/ওএফ