পুরোনো কয়েনকে ‘ম্যাগনেটিক’ বলে ৭৫ লাখ আদায়
কথিত ম্যাগনেটিক কয়েনের মাধ্যমে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। চক্রটি পুরোনো কয়েনকে ‘ম্যাগনেটিক কয়েন’ বলে বিক্রি করে প্রতারণা করতো।
গ্রেপ্তাররা হলেন মো. ইউসুফ আলী, মো. খবির চৌকিদার, মো. শামীম, মো. নাসির উদ্দিন আকন ও মো. জসিম গাজী।
এ সময় তাদের কাছ থেকে থেকে কথিত ১০টি ম্যাগনেটিক কয়েন উদ্ধার করা হয়।
মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি-গুলশান) বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এস এম রেজাউল হক বলেন, ভিকটিম একজন ব্যবসায়ী। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভিকটিমের পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে কয়েকজন ম্যাগনেটিক কয়েন ব্যবসায়ীর পরিচয় করিয়ে দেয়। আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা ভিকটিমকে তাদের কাছে থাকা একটি কয়েনের কথা বলে, যা ক্রয় করে দেশে বা বিদেশে বিক্রি করলে সে অনেক টাকার মালিক হতে পারবে।
‘ম্যাগনেটিক কয়েন কেনার জন্য মিন্টু নামে এক ব্যক্তি ইনভেস্ট করেছেন যার সঙ্গে দেখা করার জন্য ভিকটিম খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ এলাকায় যায়। সেখানে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেয় ম্যাগনেট কয়েন ব্যবসায়ীরা। এ সময় ইউসুফ ভিকটিমকে ম্যাগনেট কয়েন কেনার জন্য উৎসাহিত করেন।’
তিনি বলেন, ইউসুফ ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় এবং ম্যাগনেট কয়েন সম্পর্কে তার ধারণা থাকায় ভিকটিম তার কথা বিশ্বাস করে। ভিকটিম ওই অফিসে প্রায়শই যাতায়াত করতে থাকে। যাতায়াত এবং কথাবার্তার মাধ্যমে এক পর্যায়ে ভিকটিম ২৮ আগস্ট তিনি ৫ জনকে ম্যাগনেট কয়েন কেনার জন্য ৭৫ লাখ টাকা দেন।
‘টাকা দেওয়ার ৩/৪ দিন পর ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ ফোন করে ভিকটিমকে জানায় যে, কয়েকদিনের মধ্যে তাদের বরিশাল যেতে হবে। গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রাইভেটকারযোগে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফসহ ভিকটিম বরিশাল যায়। সেখানে তারা একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে এবং ফোনে ইঞ্জিনিয়ার ম্যাগনেট কয়েন ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে। তারা কথিত ম্যাগনেট কয়েন নিয়ে আসতেছি বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে। ৪ সেপ্টেম্বর সকালে ভিকটিমকে হোটেলে রেখে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ ম্যাগনেট কয়েনের মালিকদের সঙ্গে দেখা করতে যায়। পরে ভিকটিম বারবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তখন ভিকটিম বুঝতে পারে সে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এরপর ভিকটিম বাদী হয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।’
তিনি আরও বলেন, মামলাটির তদন্তকালে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর শনিবার রাতে ধানমন্ডি লেকপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রতারণার সাথে সম্পৃক্ত ইউসুফ আলী, খবির চৌকিদার, শামীম, নাসির ও জসিম গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রতারক চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এআর/এমএ