আমাদের দায়িত্ব দিয়ে জনগণ অসহায় : তাজুল ইসলাম
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘সরকারের উন্নয়নের ইচ্ছা আছে, বাস্তবায়ন করতে হলে সবার অংশগ্রহণ লাগবে। সবার অংশগ্রহণের ওপর নির্ভর করবে চট্টগ্রামের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে কি হবে না।’
তিনি বলেন, ‘এটা কোনো দস্যুদের দেশ না। এটা জনগণের দেশ। জনগণ অসহায়। কারণ তারা আমাদের মতো নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছেন।’
চট্টগ্রাম ওয়াসার বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত পতেঙ্গা বুস্টিং পাম্প স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন মন্ত্রী। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লুতে এটির উদ্বোধন করা হয়।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়র এক জন নির্বাচন করে ওনার মাথায় সব বোঝা উঠায় দেবেন, এটা হবে না। মেয়র যদি উন্নয়নের কাজে সবাইকে লাগাতে না পারেন তাহলে হবে না। উন্নয়ন হতে হলে মেয়রকে এগিয়ে আসতে হবে। আর সংসদ সদস্যসহ সবাই মিলে মেয়রকে সাহায্য করতে হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের কারণে বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে এবং সেই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। সারা বাংলাদের উন্নয়ন হবে চট্টগ্রামের উন্নয়ন হবে না এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না। চট্টগ্রামে উন্নয়ন আমার কাছে অগ্রাধিকার পাবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অগ্রাধিকারটাকে কাজে লাগাতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নের জন্য সরকারি বরাদ্দ দিতে পারব। এখন যদি আপনারা বলেন, আমরা বসে বসে খাব? খাওয়ার টাকা আপনারা পাঠিয়ে দেন, বেতনের টাকা পাঠিয়ে দেন, তাহলে এটা কি হবে?’ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে সারা পৃথিবীতে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সবাই বলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। শক্তিশালী করার অর্থ হলো- স্থানীয় সরকার তাদের আয়বর্ধক করবেন এবং স্থানীয় যেসব সমস্যা আছে তা সমাধান করবেন। স্থানীয়ভাবে উন্নয়নের পরিকল্পনা নেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি কাজ করেন, তাহলে সেখানে টাকা দেওয়া যাবে। টাকা কাজে লাগলে প্রধানমন্ত্রী দিতে সম্মত হবেন। টাকা কাজে লাগালে দিতে উৎসাহবোধ করব। সিডিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে এগুলো শেষ হলে চট্টগ্রামের সমস্যা থাকবে না। সমস্যার সমাধান করার জন্য টাকা তৈরি আছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করলে ২০০০ সালেই সিঙ্গাপুর হয়ে যেত বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের গর্বের জায়গা। ওখানকার অথরিটি (কর্তৃপক্ষ) ঠিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠানকে চালাবে। কর্ণফুলীর নদীর পাশে কেন ইন্ড্রাস্টি হতে হবে? চট্টগ্রামের নেতারই তো চট্টগ্রামের নেতৃত্ব দেন। চট্টগ্রাম বন্দর এলাকাকে ডাস্টবিন বানিয়ে ফেলতেছে। চট্টগ্রামের নেতারা এই বিষয়ে কথা বললেন না কেন? এটা কোনো দস্যুদের দেশ না। এটা জনগণের দেশ। জনগণ অসহায়। কারণ তারা আমাদের মতো নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছেন।’
ওয়াসার কর্মকর্তারা বলেন, ওই এলাকায় দৈনিক সাড়ে চার কোটি লিটার পানি পাম্পিং ক্ষমতা সম্পন্ন পতেঙ্গা বুস্টিং পাম্প স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। পাম্প স্টেশনের পাশে একটি রিজার্ভার করা হয়েছে। রিজার্ভার থেকে পানি পাম্পিং করে পতেঙ্গার শেষ প্রান্তে নিয়ে যাব। ২৪ ঘণ্টা পাম্পিং করা হবে। বিদ্যুৎ না থাকলেও শক্তিশালী জেনারেটরের মাধ্যমে পাম্পিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। আগে পতেঙ্গা এলাকায় পুরনো একটি পাম্প হাউজ রয়েছে। সেটির পাম্পিং ক্ষমতা মাত্র দেড় কোটি লিটার। পতেঙ্গায় সাড়ে চার কোটি লিটার বুস্টিং পাম্প স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে কালুরঘাট বুস্টিং পাম্প স্টেশন থেকে পাম্পিং করে সাড়ে চার কোটি লিটার পানি পতেঙ্গা বুস্টিং স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রমেরই আজকে উদ্বোধন করা হয়েছে।
কেএম/এফআর