চা শ্রমিকের মজুরি কত, ৪০২ নাকি ১৫৮ টাকা?
চা শ্রমিকরা দৈনিক কত মজুরি পান তা এখন জাতীয় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের দাবি, ১২০ টাকা মজুরি হলেও তাদের অন্যান্য যেসব পণ্য ও সেবা প্রদান করা হয় তা হিসাব করলে মাঠ পর্যায়ের একজন চা শ্রমিক প্রতিদিন ৪০২ টাকা পাচ্ছেন। আর কারখানা পর্যায়ের একজন শ্রমিক পাচ্ছেন ৩৭১ টাকা।
তবে চা শ্রমিকরা বলছেন, এসব মালিকপক্ষের মনগড়া হিসাব। সরকারকে বিভ্রান্ত করতে তারা এমন তথ্য দিচ্ছেন।
এদিকে চা শ্রমিকদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তানদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদ (ইউটিএসও) বলছে, মূল মজুরির বাইরে মালিকপক্ষের দেওয়া সেবাগুলোকে বিবেচনায় নেওয়া হলেও সর্বসাকুল্যে মজুরি দাঁড়ায় ১৫৮.২০ টাকা। মালিকরা যেসব সুযোগ-সুবিধাকে মজুরি দাবি করছেন, তা বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২ ধারার ৪৫ উপধারা অনুযায়ী করা যায় না।
তারা আরও বলছেন, যেসব ভাতার কথা বলে বাগান মালিকরা বেশি মজুরি দেওয়ার দাবি করছেন, শ্রম আইন ২০০৬ এর ১০৮(১) ধারা অনুযায়ী অতিরিক্ত কাজের জন্য বিভা মজুরি প্রদানের কথা উল্লেখ আছে এবং এটি দৈনিক মজুরিতে যুক্ত হবে না।
বাংলাদেশ চা সংসদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চা বাগানের মোট শ্রমিকের প্রায় ৯০ শতাংশ মাঠ পর্যায়ে এবং প্রায় ১০ শতাংশ কারখানা পর্যায়ে কাজ করেন। এর মধ্যে ঘর ভাড়া বাবদ একজন শ্রমিকের পেছনে প্রতিদিন ৭৬.৯২ টাকার ভর্তুকি দেওয়া হয়। সে হিসাবে মাসে আসে ২ হাজার ৩০৭ টাকা।
সাধারণ চা-শ্রমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদ বলছে, দুর্গম অঞ্চলে মাটির তৈরি ঘরের এত ভাড়া হয় কীভাবে। তাছাড়া শ্রম আইন ২০০৬ এর ২(৪৫) এর ক ধারা অনুযায়ী বাসস্থানের খরচ মূল বেতনের সঙ্গে যুক্ত হবে না।
চা সংসদের মতে, মাঠ পর্যায়ের একজন চা-শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা, প্লাকিং বোনাস/মাঠ/কারখানা অধিককাল কাজের আয় ৬৫ টাকা, বার্ষিক ছুটি ভাতা ৪.৬০ টাকা, বেতনসহ উৎসব ছুটি ৪.৬০ টাকা, অসুস্থতা জনিত ছুটি ৬.৫৮ টাকা, ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগ কর্তার চাঁদা ৯ টাকা, কাজে উপস্থিতি অনুযায়ী বার্ষিক উৎসব ভাতা ১৫.৪৫ টাকা এবং মোট প্রদত্ত চাঁদার ৫% প্রশাসনিক খরচ ০.৯০ টাকাসহ মোট ২২৬.১৩ টাকা মজুরি পান।
আর কারখানা পর্যায়ের একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১২৪ টাকা আর প্লাকিং বোনাস/মাঠ/কারখানা অধিককাল কাজের আয় ৩০ টাকা। বাকিগুলো মাঠের শ্রমিকের মতোই। তারা মোট পান ১৯৫.১৩ টাকা।
আরও পড়ুন: চা-শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা নির্ধারণের দাবি
চা সংসদ বলছে, দৈনিক মজুরির বাইরে একজন চা-শ্রমিক (মাঠ ও কারখানা) ঘর ভাড়া ছাড়াও ভর্তুকি মূল্যে রেশন (প্রতি কেজি ২ টাকা দরে) সরবরাহ বাবদ ব্যয় (চাল ও আটার গড়) ৩০.৭১ টাকা, চিকিৎসা সুবিধা ৭.৫০ টাকা, অবসর প্রাপ্ত শ্রমিকদের পেনশন বাবদ ২ টাকা, ধানক্ষেতের জন্য ভূমি উন্নয়ন কর/ইজারা মূল্য পরিশোধ বাবদ ০.১০ টাকা, চা-শ্রমিক পোষ্যদের শিক্ষা বাবদ ব্যয় ১.৫০ টাকা, রক্ষণাবেক্ষণ, গরু চড়ানো, চৌকিদার প্রভৃতি বাবদ ব্যয় ১ টাকা, শ্রমিক গৃহের জন্য ব্যবহৃত জমি বাবদ ভূমি উন্নয়ন কর/ইজারা মূল্য ০.০২ টাকা, শ্রমিক কল্যাণ কর্মসূচি (গৃহ মেরামত, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক স্প্রে, পয়ঃনিষ্কাশন, পাতি গামছা সরবরাহ, ছুপি সরবরাহ, ছাতা সরবরাহ, জ্বালানি কাঠ, পূজা, খেলাধুলা, বিনোদন, পণ্ডিত, শেষকৃত্য, প্রভৃতি বাবদ ৪৩ টাকা এবং বাসাবাড়িতে উৎপাদিত ফলমূল প্রভৃতি বাবদ আয় ১৪ টাকাসহ মোট ১৭৬.৭৫ টাকার সুযোগ-সুবিধা পান।
অর্থাৎ মজুরি এবং দ্রব্য ও সেবার সুবিধাসহ একজন মাঠ পর্যায়ের শ্রমিক দৈনিক ৩৭১.৮৮ টাকা এবং মাঠ পর্যায়ের শ্রমিক ৪০২.৮৮ টাকা পান বলে বাগান মালিকদের দাবি।
চা ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি চম্পা নাইডু জানান, মজুরির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে— ‘মজুরি’ অর্থ টাকায় প্রকাশ করা হয় বা যায় এমন সব পারিশ্রমিক, যা চাকরির শর্তাবলী, প্রকাশ্য বা উহ্য যেভাবেই থাকুক না কেন, পালন করা হলে কোনো শ্রমিককে তার চাকরি বা কাজের জন্য দেওয়া হয়। এমন প্রকৃতির অন্য কোনো অতিরিক্ত প্রদেয় পারিশ্রমিকও এর অন্তর্ভুক্ত হবে, তবে নিম্নলিখিত অর্থ তার অন্তর্ভুক্ত হবে না। যেমন—
(ক) বাসস্থান সংস্থান, আলো, পানি, চিকিৎসা সুবিধা বা অন্য কোনো সুবিধা প্রদানের মূল্য অথবা সরকার কর্তৃক সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা বাদ দেওয়া হয়েছে এমন কোনো সেবার মূল্য।
(খ) অবসর ভাতা তহবিল বা ভবিষ্যৎ তহবিলে মালিক কর্তৃক প্রদত্ত কোনো চাঁদা।
(গ) কোনো ভ্রমণ ভাতা অথবা কোনো ভ্রমণ রেয়াতের মূল্য।
(ঘ) কাজের প্রকৃতির কারণে কোনো বিশেষ খরচ বহন করার জন্য কোনো শ্রমিককে প্রদত্ত অর্থ।
আইনের এসব ধারার কথা তুলে ধরে চম্পা নাইডু বলেন, বাগান মালিকরা মজুরি ও সেবার যে খাতটি দেখিয়েছেন, তেমন সেবা চা-শ্রমিকরা পাচ্ছে না। এই তথ্যের মাধ্যমে তারা দেশের মানুষকে দেখাতে চাইছেন, চা-শ্রমিকদের পেছনে তাদের ইনভেস্ট অনেক বেশি। রেশন, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন খাতে তারা ভর্তুকি দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কিন্তু শ্রম আইন ও বাস্তবতার সঙ্গে তাদের প্রচারণার কোনো মিল নেই।
আরও পড়ুন : ছোট্ট ঘরের এক পাশে গরু, অন্য পাশে চা-শ্রমিকের পরিবার
এ বিষয়ে মহসিন টি হোল্ডিংয়ের (গোবিন্দ্রশ্রী চা বাগান) মালিক মহসিন মিয়া মধু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা যে কথাগুলো বলেছি সেগুলো ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে (মালিক, শ্রমিক ইউনিয়ন ও শ্রমিক) আছে। ১০ বছর আগে চায়ের কেজির যে দাম ছিল, আজও তাই। কিন্তু এসময়ে শ্রমিকদের মজুরি ৭০ ভাগ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি চা-বাগানে খোঁজ নিয়ে দেখেন, এখন চায়ের কেজিতে ১৭০ টাকার কাছাকাছি খরচ হয়। আর বিক্রি হয় ১৭০-৮০ টাকায়। এটা সবাইকে স্বীকার করতেই হবে যে, চা বিক্রি করে যে লাভ আসবে সেটা দিয়ে শ্রমিকদের বেতন, বাগানের খরচ সবকিছু দিয়েই বাগান চালাতে হবে। এখানে ভর্তুকি দেওয়ার সুযোগ নেই।
মহসিন মিয়া মধু বলেন, চায়ের ব্যবসা ভালো না। ডিজেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, যন্ত্রপাতির দাম বেড়েছে। এসব কারণে চা বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এখন সরকার যদি মজুরি বাড়ায় তাহলে আমাদের কঠিন পরিস্থিতি হবে।
আপনার বাগানে কেমন খরচ হচ্ছে— জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। তাছাড়া এত টাকা বাড়ি ভাড়া কেন রাখা হয়, রেশনের ক্ষেত্রে আপনার বাগানে চাল নয়, শুধু আটা দেওয়া হয় কেন— জানতে চাইলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
শ্রমিকদের মজুরি ১৫৮ টাকা : চা ছাত্র সংসদ
চা ছাত্র সংসদের মতে, একজন মাঠ পর্যায়ের চা-শ্রমিক মোট ১৫৮.২০ টাকা এবং কারখানা পর্যায়ের শ্রমিক ১৬২.২০ টাকার মজুরি ও সেবা পেয়ে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে ১২০ ও ১২৪ টাকা টাকা মূল মজুরি, অসুস্থতা জনিত ছুটি ৬.৫৮ টাকা, ভর্তুকি মূল্যে রেশন ২০ টাকা, চিকিৎসা সুবিধা ২ টাকা, ধানক্ষেতের জন্য ভূমি উন্নয়ন কর/ইজারা মূল্য পরিশোধ বাবদ ০.১০ টাকা, চা শ্রমিক পোষ্যদের শিক্ষা বাবদ ব্যয় ১.৫০ টাকা, শ্রমিক গৃহের জন্য ব্যবহৃত জমি বাবদ ভূমি উন্নয়ন কর/ইজারা মূল্য ০.০২ টাকা এবং শ্রমিক কল্যাণ কর্মসূচি ৮ টাকা।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বাগান উদ্যোক্তারা দাবি করেছেন, চা উত্তোলনের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই, সেক্ষেত্রে একজন শ্রমিক দৈনিক কর্মঘণ্টার মধ্যে অতিরিক্ত পাতা উত্তোলনের জন্য বোনাস পেয়ে থাকেন, যা বাগান ভেদে গড়ে দৈনিক ৬৫ টাকা হয়।
এ বিষয়ে ইউটিএসও বলছে, এটি শ্রমিকের অতিরিক্ত কাজের টাকা। শ্রম আইনের ১০৮ (১) ধারা অনুযায়ী, অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরির কথা উল্লেখ আছে এবং এটা দৈনিক মজুরিতে যুক্ত হবে না। তাদের মতে, ছুটির দিনে কাজ করালে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে তা শ্রম আইনের একটি সাধারণ বিষয়।
আরও পড়ুন: মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল মহাসড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের
বার্ষিক ছুটি ভাতার বিষয়ে ইউটিএসও বলছে, শ্রম আইন ২০০৬ এর ১১৭ এর ১(খ) ধারা অনুযায়ী, শ্রমিকরা প্রতি ২২ দিনে একদিন ছুটি পাবেন। তাই এই ছুটির টাকা দৈনিক মজুরিতে যুক্ত হবে না।
বেতনসহ উৎসব ছুটির বিষয়ে ইউটিএসও বলছে, শ্রম আইন ২০০৬ এর ১১৮(১) ধারা অনুযায়ী প্রতি শ্রমিককে ১১ দিনের ছুটির টাকা প্রদান করতে মালিকপক্ষ বাধ্য থাকবে।
ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগ কর্তার চাঁদার বিষয়ে ইউটিএসও বলছে, শ্রম আইন ২০০৬ এর ২(৪৫) এর খ ধারা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তার চাঁদা মূল মজুরিতে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
উৎসব ছুটির বিষয়ে ইউটিএসওর বক্তব্য, শ্রম আইন ২০০৬ এর ১১৮(১) ধারা অনুযায়ী উৎসব ভাতা দৈনিক ভাতার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
চাঁদার ৫ শতাংশ প্রশাসনিক খরচ বিষয়ে ইউটিএসওর প্রশ্ন, প্রশাসনিক খরচ কেন শ্রমিক দেবে?
ইউটিএসওর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত কৈরী বলেন, শ্রম আইন ২০০৬ ও শ্রমিকের প্রাপ্ত প্রকৃত সুবিধার ভিত্তিতে চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হয়।
তিনি জানান, একজন পুরুষকে ৩ দশমিক ২৭ কেজি, পোষ্য নারীকে ২ দশমিক ৪৪ কেজি, শিশুকে ১ দশমিক ২২ কেজি হিসেবে মোট ৬ দশমিক ৯৩ কেজি আটা দেওয়া হয়। নারী শ্রমিকের পোষ্য রেশন নেই। নারী শ্রমিকই প্রধান শ্রমিক। তিনি অনুপস্থিত থাকলে রেশন কাটা হয়। ধানী জমি থাকলে রেশন দেওয়া হয় না। আর তাছাড়া মালিকপক্ষের দাবির তুলনায় রেশন অনেক কম ও নিম্নমানের।
চিকিৎসা সুবিধার বিষয়ে ইউটিএসও বলছে, প্যারাসিটামল, নাপা, স্যালাইন ছাড়া উন্নতমানের কোনো চিকিৎসা সুবিধা নেই। তবে কোম্পানি ভেদে কিছুটা তারতম্য হয়ে থাকে।
অবসর প্রাপ্ত শ্রমিকদের পেনশনের বিষয়ে ইউটিএসওর মন্তব্য, শ্রম আইন ২০০৬ এর ২(৪৫) এর খ অনুযায়ী পেনশনের টাকা মূল বেতনের সঙ্গে যুক্ত হবে না।
ধানক্ষেতের জন্য ভূমি উন্নয়ন কর/ইজারা মূল্য পরিশোধের বিষয়ে তারা বলছে, ধানী জমি খুবই নগণ্য সংখ্যক চা-শ্রমিকের আছে।
চা-শ্রমিক পোষ্যদের শিক্ষা বাবদ মালিকপক্ষের ব্যয়ের বিষয়ে চা ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি চম্পা নাইডু বলেন, ভাঙা প্রাইমারি স্কুলঘর। পর্যাপ্ত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক ও প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। শিক্ষা সুবিধা শুধু প্রাইমারি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। অনেক বাগানে তাও নেই।
রক্ষণাবেক্ষণ, গরু চড়ানো, চৌকিদার, প্রভৃতি বাবদ ব্যয়ের বিষয়ে ইউটিএসও বলছে, এসব ক্ষেত্রে কোনো খরচ নেই। উল্লেখ্য, একজন চৌকিদারও ১২০ টাকা মজুরিপ্রাপ্ত শ্রমিক।
শ্রমিক কল্যাণ কর্মসূচির বিষয়ে চা ছাত্র সংসদ বলছে, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক স্প্রে, পয়ঃনিষ্কাশন, বিনোদন, পণ্ডিত, শেষকৃত্য প্রভৃতির ক্ষেত্রে কোনো খরচ দেওয়া হয় না। পাতি গামছা, চুপি ও ছাতা বছরে একবারই সরবরাহ করা হয়। এর খরচ মালিকপক্ষেরই দিতে হয়। এসব উপকরণ ব্যয় শ্রমিক কেন দেবে?
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গলের লাখাই চা বাগানের শ্রমিক রাজকুমার তন্তুবাই ঢাকা পোস্টকে বলেন, পণ্ডিতের টাকা, শেষকৃত্যের টাকা আমাদের থেকে কেটে রাখা হয়। মালিকপক্ষ দেয় না। আর পয়ঃনিষ্কাশনের বেহাল অবস্থা। কেউ বাগান আর বাড়িতে গেলে দেখতে পারবে।
চা ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি চম্পা নাইডু বলেন, ১৭০ বছর ধরে বসবাস করা ভিটায় যদি কোনো ফলের গাছ লাগানো হয় তাহলে সেটাও কি দৈনিক আয় হিসাবে ধরতে হবে? এটা হাস্যকর।
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) শ্রীমঙ্গল এরিয়া কো-অর্ডিনেটর পারভেজ কাইরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাগানের মালিকপক্ষ সরকারের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়েছে, চুক্তি হয়েছে সরকারের সঙ্গে। তাই জমির খাজনা দিতে হবে মালিকপক্ষকে। এখানে শ্রমিকদের বিষয়টি একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। আবার বসতবাড়িতে থাকা ও গরু পালনের জমির খাজনার কথা বলে শ্রমিকদের কাছ থেকে রেশন কেটে রাখা হয়, যা অমানবিক।
এএজে/এসএসএইচ