কামরাঙ্গীরচরে শুরু হলো এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার
কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের সুবিধা নিশ্চিত করতে এবার ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে চালু হয়েছে এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার। প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কামরাঙ্গীরচরের শেখ জামাল স্কুলের সামনে নদীর পাড়ে এ বাজারটি বসবে।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে কৃষকের বাজারের উদ্বোধন করা হয়।
আয়োজকরা জানান, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের আওতায় এটি ঢাকা শহরের তৃতীয় কৃষকের বাজার। কেরানীগঞ্জ উপজেলার কলাতিয়া ইউনিয়ন থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইকৃত ১০ জন নিরাপদ চাষি তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল এ বাজারে বিক্রি করবেন।
বাজারটি উদ্বোধনকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ছোট পরিসরে সপ্তাহে একদিন কৃষকের বাজারটি আয়োজিত হচ্ছে। তবে আমরা এটিকে স্থায়ী বাজারে পরিণত করতে চাই যেন এলাকাবাসী প্রতিদিনই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারেন। কৃষকদের পানি, শৌচাগার সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যালয়ের সামনের সড়কটি কৃষকের বাজার আয়োজনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। কৃষক ও ক্রেতা উভয়েই যেন উপকৃত হন, সে বিষয়টি কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হবে।
আরও পড়ুন: কারিগরি শিক্ষকদের পদোন্নতির আগে বিসিএস থেকে নিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে
কেরানীগঞ্জের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল আমীন বলেন, এই কৃষকের বাজারে কলাতিয়া ইউনিয়ন থেকে ১০ জন কৃষক এসেছেন। তারা সবাই নিরাপদ চাষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রশিক্ষিত। শুধুমাত্র দেশের বাইরে রপ্তানি নয়, দেশের মানুষের জন্যও আমরা নিরাপদ খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে চাই।
কামরাঙ্গীরচরের মেট্রোপলিটন কৃষি কর্মকর্তা মুশফিকা সুলতানা বলেন, সঠিক মাত্রায় বিষ প্রয়োগ না করা এবং বিষ প্রয়োগের পর পরই সবজি সংগ্রহ করা হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকরা বিষের মাত্রা ও সবজি সংগ্রহের সময়কাল সম্পর্কে জানেন। পাশাপাশি তারা ক্ষতিকর রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করেন। এ ধরনের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার জাভিয়ে বোয়ান বলেন, নগরবাসীর পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করতে নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট সম্মিলিতভাবে এ উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে। মোট ১৬টি বাজার এ কার্যক্রমের আওতায় স্থাপিত হবে।
ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, কৃষকের বাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলো কৃষক ও এলাকাবাসী। কৃষক নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদন করে এলাকাবাসীর জন্য এ বাজারে নিয়ে আসছেন। আবার এলাকাবাসী না কিনলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবেন না।
এএসএস/এসএসএইচ