উত্তরার ঘটনায় তদন্ত কমিটি, প্রতিবেদন দিতে হবে সকালের মধ্যে
রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুইজন। এই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) রাতে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তার, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এডিসি মনজুর মোর্শেদ। বাকি দুজনের নাম জানা যায়নি।
তদন্ত কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাস র্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেমের (বিআরটি) প্রকল্প পরিচালক সফিকুল ইসলাম।
সফিকুল ইসলাম বলেন, মূল বিষয় হচ্ছে কারিগরি ত্রুটি। আমাদের প্রকল্পের গার্ডারটি ক্রেন মিস করে প্রকল্প এলাকার বাইরে গিয়ে ছিটকে পড়েছে। কী কারণে এমন ঘটেছে, তার ব্যাখ্যা তদন্ত কমিটি দেবে। এই মুহূর্তে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ আমরা বলতে পারছি না। সেজন্য আমরা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। তাদের মঙ্গলবার সকাল ৯টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে উত্তরা জসীম উদ্দীন এলাকায় আড়ংয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাইভেটকারে একই পরিবারের সাত সদস্য ছিলেন। নিহতরা হলেন- রুবেল (৬০), ফাহিমা (৪০), ঝরনা (২৮), ঝরনার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। শুধু বেঁচে গেছেন হৃদয় ও রিয়া মনি নামের নবদম্পতি। তাদের গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর প্রাইভেটকার থেকে নিহতদের কোনোভাবেই বের করা যাচ্ছিল না। গার্ডারের নিচে প্রাইভেটকারটি চাপা পড়ে থাকায় মরদেহ বের করতে পারছিলেন না ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পরে এক্সক্যাভেটর দিয়ে গার্ডার সরিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিআরটি প্রকল্পের জন্য নির্মিত গার্ডার একটি ক্রেন দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এসময় গার্ডারটি হঠাৎ করে রাস্তায় চলমান প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে যায়। গার্ডারটি ক্রেন থেকে ছুটে যায়নি, বরং ক্রেনের একপাশ উল্টে যায়।
ধারণা করা হচ্ছে ক্রেনটির ধারণক্ষমতা কম ছিল কিংবা চালক ভুলভাবে সেটি অপারেট করেছেন।
এর আগে গত ১৫ জুলাই গাজীপুরে এই বিআরটি প্রকল্পের ‘লঞ্চিং গার্ডার’ চাপায় এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। ওই দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক ও একজন পথচারী আহত হয়েছিলেন।
দুর্ঘটনার পর প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হয়। তারপরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর মধ্যেই এ দুর্ঘটনা ঘটল।
এমএইচএন/ওএফ