বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে সৌদি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান
দেশের প্রয়োজনে বৈধ পথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণে সৌদি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের প্রয়োজনীয়তা, প্রতিবন্ধকতা ও সমাধানের উপায়’ শীর্ষক আয়োজিত এক সেমিনারে এ আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরবে বসবাসরত প্রায় ২৬ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ করলে দেশে ডলারের রিজার্ভ আরও বৃদ্ধি পাবে। বিগত অর্থবছরে বিদেশ থেকে দেশে রেমিট্যান্স গেছে প্রায় ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে সৌদি প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার।
>> ১০ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৭ হাজার ৮শ কোটি টাকা
তিনি বলেন, দেশে প্রেরিত রেমিট্যান্সের মধ্যে সৌদি প্রবাসীরাই সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এজন্য সৌদি প্রবাসীদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করে আরও সহজে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত বিদেশে আসার আগে সবাইকে অবশ্যই একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তাহলে সহজেই যার যার নিজস্ব একাউন্টে টাকা পাঠানো ও তার হিসাব রাখা সহজ হবে।
প্রবাসীদের সময়মত নিজের পাসপোর্ট ও ইকামার মেয়াদ হালনাগাদ রাখার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ইকামার মেয়াদ না থাকলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো সম্ভব হয় না। তাই এ বিষয়ে প্রবাসীদের সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে আমাদের আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের আমদানি ব্যয় মেটানো ও দেশের অর্থনীতি গতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈধ পথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে অর্থ প্রেরণের জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।
>> রেমিট্যান্স আনতে শর্ত শিথিল করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
তিনি আরও বলেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে আপনার পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে অবদান নিশ্চিত হয়। এছাড়া দেশে আপনার আয় বৈধ বলে বিবেচিত হয়। একইসঙ্গে সরকার ঘোষিত ২.৫ শতাংশ হারে প্রণোদনাও পাওয়া যায়। প্রবাসী আয়ে সম্পূর্ণ করমুক্ত সুবিধাও পাওয়া যায়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে ও প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে আসুন সবাই বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ করি।
সেমিনারে রিয়াদের ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অভিবাসীরা যোগ দেন। জেদ্দা, দাম্মাম, তাবুকসহ বিভিন্ন শহরের অভিবাসীরা জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রবাসীরা তাদের বিভিন্ন মতামত, প্রশ্ন ও সুপারিশ তুলে ধরেন। অভিবাসীদের সরকারের পেনশনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ সময় প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ও তাদের সুপারিশগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
এনআই/ওএফ