হেলমেট বাহিনীর বিচারের দাবিতে রাজপথে শিক্ষার্থীরা
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর সায়েন্স্যাবরেটরি মোড়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীরা বলেন, ৯ দফা দাবিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চার বছর পূর্তি হলেও এখনো সড়ক নিরাপদ হয়নি। ২০১৮ সালের স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র আন্দোলন ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’ থামিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কুচক্রী মহলসহ সরকারের হেলমেট ও লুঙ্গি বাহিনী ওই বছরের ২, ৪, ৫ ও ৬ আগস্ট আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর বর্বর হামলা চালায়।
তারা বলেন, হামলায় আন্দোলনকারী অনেক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনার চার বছর পেরিয়ে গেলেও সরকার সেই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা শিক্ষার্থীরা হতাশ হচ্ছি। তাই হামলাকারী হেলমেট ও লুঙ্গি বাহিনীর বিচারের দাবিতে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম আপন বলেন, ২০১৮ সালে নয় দফা দাবি পেশ করা হয়েছিল। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট মহল বিভিন্ন টালবাহানায় এখনো সেই নয় দফা বাস্তবায়ন করেনি। আমরা চাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন এই নয় দফার পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়।
৯ দফা দাবি
১. দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্থীসহ সব সড়কহত্যার বিচার করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহলকে নিতে হবে এবং পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২. ঢাকাসহ সারাদেশে সকল গণপরিবহনে (সড়ক, নৌ, রেল ও আসন্ন মেট্রোরেল) শিক্ষার্থীদের জন্য শর্তহীন হাফ পাস নিশ্চিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৩. যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য গণপরিবহনের মানোন্নয়ন ও জনসাধারণের চলাচলের জন্য ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন ও স্বয়ংক্রিয়করণসহ পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ, কর্মঘণ্টা ও নির্দিষ্ট মাসিক বেতন নির্ধারণ এবং সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সকল যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকের যথাযথ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৫. গণপরিবহনে সংরক্ষিত আসন ও নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক কার্যকরী জরুরি হেল্পলাইন সেন্টার গড়ে তুলতে হবে।
৬. বৈধ ও অবৈধ যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনতে হবে এবং বিআরটিএর সব কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. দেশের প্রতিটি রুটে পর্যাপ্ত মানসম্মত রাষ্ট্রায়াত্ত গণপরিবহন নিশ্চিত করতে হবে এবং ব্যক্তিগত যানবাহন সীমিতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৮. ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হবে।
৯. সকল গণপরিবহনে সরকারিভাবে ধার্যকৃত ভাড়া নিশ্চিতকরণ ও কাউন্টারভিত্তিক টিকেট সিস্টেম চালুর মাধ্যমে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা।
আরএইচটি/ওএফ