চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিলাওয়াল ভুট্টোর ৪০ মিনিট
আসিয়ানের ২৯তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে কম্বোডিয়া যাওয়ার পথে বাংলাদেশে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি নিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করেন তিনি।
বুধবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর বিলাওয়ালকে স্বাগত জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় তারা একে অপরকে বই উপহার দেন।
বিলাওয়াল তথ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।
ড. মোমেনের উদ্দেশে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য আন্তরিক শুভকামনা জানাচ্ছি।
কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে দুই দিনব্যাপী আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের ২৯তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট)। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ফোরামে যোগ দিতে নমপেনে পৌঁছেছেন।
সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত আটটি মুসলিম রাষ্ট্রের সংগঠন ডি-এইটের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে ঢাকা সফরের জন্য বিশেষ আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ঢাকা সফর করেননি। বরং আনুষ্ঠানিকতা রক্ষায় পাক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারকে ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ। পরে সম্মেলনের শেষ সময়ে ঢাকা সফর বাতিল করেন হিনা।
হিনার ঢাকা সফর বাতিল নিয়ে কূটনৈতিক মহলে নানা আলোচনা রয়েছে। সফর বাতিলের কারণ হিসেবে বলা হয়, ডি-এইট সম্মেলনের ঠিক আগ মুহূর্তে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সঙ্গে পাকিস্তানের পতাকা জুড়ে দিয়ে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন ফেসবুকে যে ছবি প্রকাশ করেছিল, সে বিষয়ে ঢাকার প্রতিক্রিয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় তাদের, যেটি হয়তো ভালোভাবে নিতে পারেনি ইসলামাবাদ।
এর বাইরে আরও কিছু বিষয় সফর বাতিলে কাজ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেমন, গত বছরের ডিসেম্বরে পাকিস্তানে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি বৈঠকে অংশ নিতে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের। কিন্তু শেষ সময়ে তিনি সফরটি বাতিল করেন। তার বদলে সেখানে পাঠানো হয় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনকে। এ ছাড়া চলতি বছর মার্চের মাঝামাঝি পাকিস্তানের ইসলামাবাদে দুই দিনব্যাপী ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৮তম অধিবেশনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি দেশটি সফরে যাননি। সেখানেও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনকে পাঠায় ঢাকা।
হিনার ঢাকা সফর বাতিল নিয়ে এসব বিষয়কে অবশ্য ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তারা উড়িয়ে দেন। পরে সম্মেলনে পাক প্রতিমন্ত্রী হিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
২০১২ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ঢাকা সফরে আসেন হিনা রব্বানি খার। সে সময় ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ডি-এইট শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন তিনি। এরপর থেকে পাকিস্তানের কোনো মন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সফরে আসেননি।
এনআই/আরএইচ