ফেলা হয়নি ক্রসিং বার, ছিলেন না গেটম্যান : আহত মাইক্রোযাত্রী
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসে থাকা ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬ জন।
আহতদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের ২৪ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন হাটহাজারীর খন্দকিয়া পাড়ার আবুল কাসেমের ছেলে জুনায়েদ কায়সার ইমন।
তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, সড়কের লেভেল ক্রসিংয়ের সিগন্যাল বারটি ফেলা ছিল না। আমাদের গাড়ির চালক ট্রেন আসছে কি না সেদিকে খেয়াল করেননি। এছাড়া আমি কোনো গেটম্যানকে দেখতে পাইনি।
তিনি বলেন, আমি মাইক্রোবাসের পেছনে বসেছিলাম। আমরাও ট্রেন আসার বিষয়টি দেখতে পাইনি। মাইক্রোবাসটি রেল লাইনে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে সামনে নিয়ে যায়। আমি মাইক্রোবাসের কাচ ভেঙে বের হয়ে আসি।
ইমন বলেন, আমাদের আসার সময় গেটম্যানের কক্ষ তালা দেওয়া ছিল। গেটম্যানকেও দেখিনি। সিগন্যাল বারটি ফেলা হলেও এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটত না।
হাসপাতালে বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিলেন ইমন। এ সময় পাশে থাকা স্বজনদের কাছে বারবার বন্ধুদের অবস্থা জানতে চান তিনি।
ইমন বলেন, হাটহাজারীর আমান বাজার থেকে সকাল ৮টার দিকে বের হই আমরা। ঝরনা থেকে আসার সময় সোয়া ১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপর রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, ওই লেভেল ক্রসিংয়ের সিগন্যাল বারটি ফেলা ছিল। চালক তা উঠিয়ে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এ কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তিনি বলেন, খৈয়াছড়া এলাকায় রেলওয়ের ওপর দিয়ে একটি সড়ক পথ গেছে। সেখানে রেলওয়ের নিযুক্ত গেটম্যানও আছে। দুর্ঘটনার পরপর গেটকিপারের সঙ্গে কথা বলেছি। গেটকিপার আমাকে জানিয়েছেন, ট্রেন আসার আগেই গেট ফেলা ছিল। কিন্তু মাইক্রোবাসের চালক গেটবারটি জোর করে তুলে রেললাইনে প্রবেশ করেন। এরপর মহানগর প্রভাতী ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।
এদিকে ঘটনায় আহত ছয়জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ছয়জন হলেন— মাইক্রোবাসের হেলপার তৌকিদ ইবনে শাওন (২০), একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মাহিম (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো. ইমন(১৯), এসএসসি পরীক্ষার্থী তছমির পাবেল (১৬) ও মো. সৈকত (১৮)।
অন্যদিকে নিহত ১১ জনের মধ্যে নয়জনের পরিচয় মিলেছে। তারা হলেন, কোচিং সেন্টারের চার শিক্ষক জিসান, সজীব, রাকিব এবং রেদোয়ান। এছাড়া কেএস নজুমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম, আয়াত, মারুফ, তাসফির, হাসান।
কেএম/এসকেডি