দেশের নাগরিক পরিসর সংকুচিত হয়ে আসছে : আর্টিকেল নাইনটিন
ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিক পরিসর সংকুচিত হয়ে আসছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন। সোমবার (২৭ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এ তথ্য জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ সব উন্নয়ন কার্যক্রমে সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রতিবাদের অধিকারের মতো ইস্যু নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও ভিন্নমতকে দমন করার চর্চা এসব কার্যক্রমকে ক্ষুণ্ণ করে।
আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে নাগরিক পরিসর সংকুচিত হয়ে আসছে। বিশেষত যেসব নাগরিক সংগঠন গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন যেমন বিচার বহির্ভূত হত্যা ও গুম নিয়ে কাজ করে, তাদের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অধিকার কর্মী, ভিন্নমত পোষণকারী এবং সুশীল সমাজের সংগঠনগুলো প্রায়ই সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কাছ থেকে অযাচিত ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হচ্ছে। আইনি এবং প্রশাসনিক বাধা, নিয়ন্ত্রণ এবং হয়রানির জন্য তাদের কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।’
ফারুখ ফয়সল আরও বলেন, ‘প্রতিবাদ করা, সংগঠন করা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। এটি বাংলাদেশ সংবিধানের যথাক্রমে ৩৭, ৩৮ এবং ৩৯ অনুচ্ছেদে নিশ্চিত করা হয়েছে।’
‘কিন্তু মানবাধিকার কর্মীদের নির্বিচার গ্রেপ্তার, আটক, হুমকি, হয়রানি এবং নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলোকে আইনি ও প্রশাসনিক দমন-পীড়ন নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ অনুমোদন করার সময় বাংলাদেশ যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার স্পষ্ট লঙ্ঘন। সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে নাগরিক অধিকার সংগঠন এবং মানবাধিকার কর্মীদের নিয়ে নেওয়া যেকোনো পদক্ষেপ যেন বৈধ, আনুপাতিক, প্রয়োজনীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।’
নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র, সুশাসন, কর্তৃত্ববাদের বিরোধিতা, আইনের শাসন, সরকারের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতে কাজ করে। তাদের মাধ্যমে উত্থাপিত সমস্যার সমাধান করার পরিবর্তে, সরকার কখনো কখনো তাদের নিপীড়নের চেষ্টা করে।
আর্টিকেল নাইনটিন সরকারের প্রতি নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলোর জন্য ভয়মুক্ত অনুকূল কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানায়। পাশাপাশি সরকারকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, প্রতিবাদের অধিকার ও নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চায় আরও বেশি সংবেদশীল হওয়ার আহ্বান জানায়।
এসআর/এমএইচএস