হাওরে অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও স্থাপনা নির্মাণ বন্যার কারণ
হাওরের নাব্য হারিয়ে যাচ্ছে অপরিকল্পিত অবকাঠামো, আবাসস্থল ও রাস্তা-বাঁধ নির্মাণের কারণে। ১৯৮৮-২০০০ পর্যন্ত যতটুকু না হাওর এলাকা কমেছে তার চেয়ে বেশি কমেছে ২০০৬-২০১৩ সালের মধ্যে।
শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) উদ্যোগে ‘হাওর এলাকার ভূমি ব্যবহারের কয়েক দশকের পরিবর্তন ও এবারের বন্যার ব্যাপকতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।
গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. আদিল মোহাম্মদ খান। বাংলাদেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৩৭৩টি হাওর নিয়ে গবেষণা করে তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
বক্তারা বলেন, হাওরে যেসব উন্নয়ন হয়েছে সেগুলো টেকসই উন্নয়ন নয়। হাওরের মধ্য দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে পানির প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা হয়, যার ফলে বন্যার সৃষ্টি হয়ে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এজন্য হাওরে টেকসই উন্নয়ন দরকার। হাওর আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। দিন দিন হাওর অঞ্চল কমে যাওয়ায় পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গিয়ে বন্যা হচ্ছে। এভাবে হাওর কমতে থাকলে ঢাকা শহরও একদিন বন্যায় প্লাবিত হবে। ২০০০ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত হাওর নিয়ে সরকারের কোন মাস্টার প্ল্যান ছিল না। বর্তমানে যে মাস্টার প্লান চলমান সেটি অনেক দেরি হয়ে গেছে।
এ সময় হাওরের নাব্য বৃদ্ধিতে গবেষণায় কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলো হলো,
১. যেকোনো মূল্যে হাওরকে রক্ষা করতে হবে।
২.আমাদের পূর্ব পুরুষদের ন্যায় জলের সাথে বসবাস করাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৩. শুধু হাওর না সারাদেশে জলাশয় ও জলাভূমি রক্ষায় অপরিকল্পিত বাঁধ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
৪. হাওরের বিলুপ্ত খাল নদী বিল পুনরুদ্ধার করতে হবে।
৫. হাওরের উন্নয়নে জনমতকে গুরুত্ব দিতে হবে।
৫. হাওরের ভূমি ও উন্নয়নকে তদারকি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, আইপিডির পরিচালক চৌধুরী যাবের সাদেক, পরিকল্পনাবিদ হামিদুল হাসান নবীন, পরিবেশবিদ ফরহাদুর রেজা, এস এম মারুফ আহমেদ এবং গবেষক ইনজামামুল হক রিফাত ও মারিয়া মেহরিন।
আইবি/এসকেডি