বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদকে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান
বিলম্ব না করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম আত্মস্বীকৃত খুনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে দিতে পুনরায় দেশটির সহায়তা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। এসময় যুক্তরাষ্ট্রের দূতের কাছে এ সহযোগিতা কামনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৪৬ বছর পার হতে চলল। দীর্ঘ এ সময়ে বঙ্গবন্ধুর সব খুনিদের বিচার শেষ করা সম্ভব হয়নি। খুনিদের মধ্যে পলাতক পাঁচজনের একজন রাশেদ চৌধুরী, যিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাকে দেশে ফেরাতে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কিন্তু ফাঁসির আসামি বলে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে অনীহা দেখিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের শেষের দিকে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে আশার আলো দেখা যায়। অর্থাৎ দীর্ঘ ১৫ বছর পর গত বছরের মাঝামাঝিতে রাশেদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা করে ওয়াশিংটন।
এদিকে, ফাঁসির দণ্ড পাওয়া পাঁচ খুনির মধ্যে অন্তত একজনকে হলেও জন্মশতবার্ষিকীর বছরে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন যে, জো বাইডেন প্রশাসনের সময়ে সামনের দিনগুলোতে ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে।
রাষ্ট্রদূত মিলার দুই দেশের সম্পর্ক আরও প্রাণবন্ত করার জন্য আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বাইডেন প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল; বিশেষ করে হাইটেক পার্কে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান যে, দক্ষিণ এশিয়ায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ যে গুরুত্ব দিচ্ছে তা লক্ষণীয়।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা জন কেরির ফোনলাপের বিষয়টি তুলে ধরেন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়ে আগামী নভেম্বরে দেশটির গ্লাসগোতে হতে যাওয়া ইউনিসেফের কপ-২৬ সম্মেলনের প্রসঙ্গ টানেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন; বিশেষ করে প্রত্যাবাসনে দেশটির ঢাকাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা তুলে ধরেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রদূত মিলার জানান, ওয়াশিংটন এখনও রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি আওয়াজ তুলছে।
এনআই/আরএইচ