দিনে মিস্ত্রি-চালক নয়তো ডেলিভারিম্যান, রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাত
নানা পেশায় সাধারণের চোখে পরিশ্রমী তারা। তবে হরেক রকম পেশার আড়ালে আয় বাড়াতে তারা ডাকাতিকেও পেশা হিসেবে বেছে নেয়। বাসা পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগে ডাকাতির রেকিসহ নানা তথ্য মেলে সহজে। দিনের বেলায় তারা সিএনজি অটোরিকশাচালক, কখনো সবজি বিক্রেতা, রং মিস্ত্রি, মুদি দোকানি, কখনো বা অনলাইনে ফুড ডেলিভারিম্যান। তবে রাতের অন্ধকারে তারাই হয়ে ওঠে দুর্ধর্ষ ডাকাত।
মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি জানান, তারা নানা পেশার আড়ালে অস্ত্র হাতে অত্যন্ত সুকৌশলে লুটে নেয় বাসা বাড়িতে থাকা মূল্যবান সামগ্রী। সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও কেরানীগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দুর্ধর্ষ এই ডাকাত চক্রের সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এই চক্রটি শ্রমজীবী পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করে আসছিল। অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতকালে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন, সুজন হাওলাদার (৩২), রবিউল আউয়াল ওরফে রবি (১৯), বাবু ওরফে জুয়েল (২২), মো. রনি (১৯), একরাম আলী (৩৩) ও ইব্রাহিম মিঝি (২০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে একনলা বন্দুক, ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি সিএনজি অটোরিকশা, চাপাতি, লোহার তৈরি ছোরা দুটি, লোহার রড, পাইপ কাটার রেঞ্জ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সিএনজি অটোরিকশা চালক, অনলাইনভিত্তিক ফুড ডেলিভারি ম্যান, রং মিস্ত্রি, মুদি দোকানের কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে বিভিন্ন বাসা রেকি করে তথ্য সংগ্রহ করত তারা। এরপর রাতে ডাকাতির উদ্দেশ্য সেই সব বাসায় প্রবেশ করে সব লুটপাট করে পালিয়ে যেত তারা।
সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক ব্যবসায়ীর বাসাসহ সাভারের ধামরাই, কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের কয়েকটি ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত এ চক্রটি। গত সোমবার রাতেও মোহাম্মদপুর থানার বছিলা সিটি ডেভেলপার্স লিমিটেড এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তারা। সংবাদ পেয়ে তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় দুটি ডাকাতি মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের সদস্যদের সম্পর্কে জানতে পেরেছি তারা সবাই নানা পেশায় জড়িত। এসব পেশার আড়ালে ডাকাতি করে আসছিল। চক্রের সদস্য সংখ্যা ১৫ থেকে ১৬ জন। চক্রটির মূলহোতা সাদ্দাম হোসেন, তিনি পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। প্রতিটি সদস্যদের বিরুদ্ধে ৭ থেকে ৮টি করে মামলা রয়েছে।
জেইউ/এসকেডি