স্ত্রী-মেয়েকে হত্যার দায়ে একজনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বাগানবাজার এলাকায় একটি চা বাগানে স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে লাশ গুমের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় রওশন আলী নামের একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
রোববার (২৯ মে) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস ওয়াহিদের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অতিরিক্ত জেলা পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের জুন মাসে স্ত্রী মমতাজ বেগম ও মেয়েশিশু আকলিমাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর চা বাগানের ভেতরের কূপে ফেলে দেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ২০ জুলাই স্বামী রওশন আলীকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এ ঘটনায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় আসামিকে আজ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এছাড়া ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ২ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী বলেন, ১৯৯৭ সালে রওশন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এরপর ২০১০ সালে রওশন জামিনে গিয়ে পালিয়ে যান। রায় ঘোষণার সময় রওশন পলাতক ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের জুনে রওশন স্ত্রী মমতাজ বেগম ও তার এক বছরেরও কম বয়সী মেয়ে আকলিমাকে ফটিকছড়ির বাগানবাজার এলাকার একটি চা বাগানে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর লাশ বাগানের একটি কূপে ফেলে দেন। এরপর পালিয়ে যান রওশন। তিনি ওই চা বাগানটির শ্রমিক ছিলেন। এরপর মেয়ে, জামাতা ও নাতনির সন্ধান না পেয়ে মমতাজের বাবা ফটিকছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এরপর হঠাৎ ১৯৯৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রওশন ওই চা বাগানে ফিরে আসেন। তখন অন্য শ্রমিকরা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। প্রথমে পুলিশ তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডে রওশন স্ত্রী ও মেয়েকে খুনের কথা স্বীকার করে ও লাশ কূপে ফেলে দেওয়ার কথা জানায়। পরে পুলিশ ওই কূপ থেকে হাড়গোড়, মাথার খুলি ও মমতাজের স্বর্ণের নাকফুল উদ্ধার করে। পরে ১৯৯৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মমতাজের বাবা আব্দুর রহিম বাদী হয়ে রওশনের বিরুদ্ধে ফটিকছড়ি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দণ্ডিত রওশন আলী ফটিকছড়ি উপজেলার মতিননগর গ্রামের মৃত ফোরকান আলীর ছেলে।
কেএম/এসএসএইচ