ঢাকা পোস্ট : নতুন প্রতিশ্রুতি নতুন প্রত্যাশা
করোনা মহামারির লম্বা দুঃসময় কাটিয়ে নতুন এক ভোরের সোনারোদ দেখছে মানুষ। ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিশ্ব নতুন সম্ভাবনা নতুন প্রত্যাশা নিয়ে। নতুন সময়ে কেটে যাবে পুরনো ক্ষত, নতুন আলোয় মুছে যাবে আধার। অনেক হারানোর একটা বছর পেরিয়ে ২০২১ কেবল ক্যালেন্ডারের পাতায়ই নতুন দিন তারিখের হিসাব নিয়ে আসেনি, এসেছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার নিয়ে।
নতুন সম্ভাবনার সেই পথে শামিল হলো নিউজপোর্টাল ঢাকাপোস্ট.কম। এক সময়ে তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যা পাওয়া বাংলাদেশে গণমাধ্যমের পথ কখনই মসৃণ ছিল না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে আজ অবধি দেশের গণমাধ্যমগুলোকে বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়েই চলতে হয়েছে এবং হচ্ছে। তারপরও কেউ কেউ সাহস করে এ খাতে আলোর সন্ধানে নামেন। ইউএস বাংলা গ্রুপও তেমনই সাহস দেখিয়ে দেশের গণমাধ্যম ইতিহাসে শুরু করল নতুন এক দিনের সূচনা। সাহস করে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো মেগা প্রকল্পের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ যেমন তার তলাববিহীন ঝুড়ির যুগের সমাপ্তি টেনেছে, তেমনি গণমাধ্যমের চলার পথও হবে মসৃণ, সূচনালগ্নে রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে সেটাই প্রত্যাশা ঢাকা পোস্টের।
দেশের নবীনতম এ সংবাদমাধ্যমটির আগমন ঘিরে আয়োজন ছিল গত কয়েক মাস জুড়েই। সে ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ প্রস্তুতিপর্ব সেরে ১৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল ঢাকাপোস্ট.কম। যাত্রা শুরুর এ মাহেন্দ্র ক্ষণে সঙ্গী হয়েছেন দেশের গুরুত্বপূর্ণ বহু মানুষ। সত্যের সাথে সন্ধি স্লোগানে যাত্রা শুরু করা নিউজ পোর্টালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। কঠিন সময়ে এমন বড় একটা উদ্যোগের প্রশংসা উঠে আসে তার কথাতে। শিরীন শারমিন বলেন, কোভিড-১৯ এর মতো কঠিন সময়ে এ ধরনের একটি উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ইউএস-বাংলা গ্রুপকে অভিনন্দন জানাই। এ উদ্যোগের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে অনেকেই উপকৃত হবেন এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হবে। সমগ্র বিশ্বের প্রেক্ষাপটে আমরা যদি বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করি, তথ্যপ্রযুক্তি এখন সুবর্ণ যুগ পার করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পাচ্ছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের এ পর্বে স্পিকারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন ঢাকা পোস্ট সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, ইউএস বাংলা গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লে. জেনারেল (অব.) মো. মইনুল ইসলাম, টিভি টুডের এডিটর ইন চিফ মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ও ইউএস-বাংলা গ্রুপের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) শামস।
নতুন একটি উদ্যোগ মানেই নতুন চ্যালেঞ্জ। বুক পেতে সে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন ঢাকা পোস্টের তরুণ কর্মীরাও। নীতিনির্ধারণে নিউজ পোর্টালটি সবার আগে রেখেছে খবরের বস্তুনিষ্ঠতাকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা পোস্ট সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার বলেন, সত্যের সাথে সন্ধি- আমরা কী চাই, তা আমাদের এই স্লোগানেই স্পষ্ট। একটি গণমাধ্যমের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারা। আমরাও সে বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব। একটি গণমাধ্যমের আসলে সামাজিক দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় থাকে না। সামাজিক দায়বদ্ধতার এই জায়গা থেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ঢাকা পোস্ট শুরু থেকেই সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে।
খবর একসময়ে দুষ্প্রাপ্য একটি বিষয় ছিল। যে কোনো একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার দিন পেরিয়ে সেটি ছাপা পত্রিকায় আসতে ন্যূনতম পরদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। তবে সে সময় বদলেছে। ছাপা পত্রিকার গুরুত্ব কোনো অংশে না কমলেও পাঠকের পছন্দ, রুচি ও অভ্যাসে এসেছে বড় পরিবর্তন। বস্তুনিষ্ঠ খবর, সঠিক তথ্যের পাশাপাশি পাঠকের চাহিদার তালিকায় যুক্ত হয়েছে তাৎক্ষণিক খবর চাওয়ার প্রবণতা। যখন ঘটনা, তখনই খবর- যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পাঠকের এ চাহিদা পূরণ করতে পারছে নিউজ পোর্টালগুলো। খবরের বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রেখে পাঠকের সে চাহিদা পূরণে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে ঢাকা পোস্ট।
সংবাদমাধ্যমটির উদ্বোধনী আয়োজনের সঙ্গী হয়ে নিউজ পোর্টাল সম্পর্কে নিজেদের ধারণা বদলে যাওয়ার কথা উঠে এসেছে অনেক অতিথির কথাতেই। অতিথির তালিকায় একদিকে ছিলেন সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের বাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও যুক্ত হয়েছিলেন এ সংবাদমাধ্যমের সূচনালগ্নে। ক্রীড়াজগতের মানুষ থেকে শুরু করে অভিনেতা, সঙ্গীতশিল্পী, সরকারের সাবেক ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা তো ছিলেনই, শুভকামনা দিতে ঢাকা পোস্ট কার্যালয়ে এসেছিলেন অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিকরা। এ ছাড়া দেশের সব জেলাতেও আলাদাভাবে ছিল উদ্বোধনী আয়োজন। সেগুলোতেও যুক্ত হয়েছিলেন সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ে শীর্ষ ব্যক্তিরা।
ঢাকা পোস্টের উদ্বোধনী আয়োজনের সঙ্গী হতে কার্যালয়ে এসে অন্যরকম এক সময় উপহার দিয়ে গেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। যে সময়টুকু তিনি সংবাদকর্মীদের তরুণ এই দলটির সাথে কাটিয়েছেন তাতে একদিকে তিনি তুলে ধরেছেন একটি রাষ্ট্রে সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব, অন্যদিকে মেতেছেন হাসিমুখে দারুণ এক আড্ডায়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী গল্পের মতো করে যে বক্তব্য দেন তার সারাংশ এই যে, বাংলাদেশের গণমাধ্যম দেশের নেতিবাচক খবরগুলো বেশি করে সম্প্রচার করে। তাতে খণ্ডিত অংশ প্রকাশ পায়। কিন্তু বিদেশে গণমাধ্যমগুলো তা করে না। তিনি ঢাকা পোস্টের যাত্রা শুরুর দিনে সরকারের উন্নয়নসহ দেশ যে এগিয়ে গেছে তা তুলে ধরার আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী আয়োজনে সশরীরে হাজির না হলেও ঢাকা পোস্টকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও। তিনি বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত ব্যাপক ও গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তবুদ্ধি চর্চার মাধ্যমে গণমাধ্যম একটি অগ্রসরমান জাতি গঠনে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। জঙ্গিবাদ, অপসংস্কৃতি, মূল্যবোধের অবক্ষয়, ধর্মান্ধতা, মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসরোধে বিশেষ করে গণমাধ্যম বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়ে একটি নিষ্কলুষ সমাজ গঠনে অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।
হাজির হয়েছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানও। এসে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দেখে সবচেয়ে অবাক হয়েছি। একই বয়সের ইউনিফর্ম পরিহিত সবাইকে তরুণ ফুটবল টিমের মতো লাগছে। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে, আমি কোনো ফুটবল দলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছি। চমৎকার, ইয়াং ও ইয়ুথফুল একটা আবহ। যদিও আমার আসতে পাক্কা দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। কিন্তু এখানে এসে, আপনাদের দেখে আমার মন ভালো হয়ে গেল। ঢাকা পোস্টকে অভিনন্দন।’
এসেছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বলে গেলেন, তিনি চান প্রত্যাশা থাকবে প্রতিষ্ঠানটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করবে। মানুষের সুখ-দুঃখের কথা তুলে ধরবে। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ঢাকা পোস্ট মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে গেছেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। মায়া বলেন, ভাষার মাসে ঢাকা পোস্টের আগমন, যাত্রা শুভ হোক। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় ঢাকা পোস্ট ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত রাখতে পারবে। আমি আশা রাখবো এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। দেশের জনগণের মনের কথা তারা তুলে ধরতে পারবেন। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ঢাকা পোস্ট মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাবে।
একটি নিউজ পোর্টালের এত বড় আয়োজন দেখে একরকমের বিস্ময় প্রকাশই করে গেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। ঢাকা পোস্টকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা পোস্ট অফিসে এসে অবাক হয়েছি। এখানে এসে সুন্দর একটি পরিবেশ দেখেছি। অনেক টেলিভিশন চ্যানেলেও এমন পরিবেশ নেই। তিনি আরও বলেন, সংবাদমাধ্যমকে সবসময় শ্রদ্ধা করি। তারা বিভিন্ন অনিয়ম, অস্বচ্ছতাসহ সমাজের নানা বিষয় তুলে আনে। তাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব অনেক বেশি।
ঢাকা পোস্ট সকলকে ছাড়িয়ে সত্য প্রকাশে নির্ভীকতার পরিচয় দিয়ে একটি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। ঢাকা পোস্ট কার্যালয়ে এসে র্যাবের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে ঢাকা পোস্টের প্রতিটি সদস্যকে অভিনন্দন জানান তিনি। আশিক বিল্লাহ বলেন, আমরা প্রত্যাশা করছি, একদিন ঢাকা পোস্ট সকলকে ছাড়িয়ে সত্য প্রকাশে নির্ভীকতার পরিচয় দিয়ে একটি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করবে।
শুভজন হয়ে ঢাকা পোস্টের শুভদিনে সঙ্গী হয়েছিলেন এক সময়ের দাপুটে পুলিশ কর্মকর্তা, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বিশ্বে তথ্যপ্রবাহ বাধাহীনভাবে চলতে দেওয়া হয়। নিউজ মিডিয়া যেন নিরপেক্ষভাবে মানুষের কথা বলার সুযোগ পায়, তাহলে সেটা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। আমি আশা করব, ঢাকা পোস্ট তরুণ যারা সাংবাদিক আছেন এবং ঢাকা পোস্টের ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য কাজ করে যাবে।’
ঢাকা পোস্ট কার্যালয়ে এসেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রতিনিধি দল। তাদের হাত দিয়ে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি। শুভেচ্ছা বার্তায় বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বিশ্বাস করে নির্ভীক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে ঢাকা পোস্ট বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। ঢাকা পোস্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রার এই আনন্দঘন দিনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ইহার উত্তরোত্তর সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করছে।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক সাজ্জাদুল আলম ববিও অংশ হয়েছেন এই নবযাত্রার। শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, ‘ঢাকা পোস্টকে অভিনন্দন জানাই। তাদের পথচলা সুন্দর হোক। আমি যেহেতু ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ, আমি ক্রীড়াঙ্গনের কথাই বলি। আমি চাই ঢাকা পোস্ট সর্বদা বস্তুনিষ্ঠতা ধরে রাখবে। ক্রীড়াঙ্গনের ইতিবাচক খবরগুলো প্রকাশ করবে। এমন কোনও চটকদার খবর প্রকাশ করবে না যা দিয়ে ক্রীড়াঙ্গন বা ঢাকা পোস্ট নিজেরা নিজেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।’
রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে আয়োজনের সঙ্গী হয়ে আরও এসেছিলেন- আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক প্রমুখ
ঢাকা পোস্টকে শুভেচ্ছা জানাতে আসা অতিথিদের মধ্যে বড় একট অংশ ছিলেন তারকারা। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন- অভিনয়শিল্পী সাইমন, অধরা খান, আমান রেজা, বাপ্পী চৌধুরী। সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে ছিলেন- মেহরীন, কোনাল, জুলি, আর্নিক, আনিকা, আলিফ আলাউদ্দিন, রবি চৌধুরী, রন্টি দাস, পিংকী ছেত্রী, বেলাল কান, জয় শাহরিয়ার, রাজীব, কাজী শুভ। এছাড়া সঙ্গীত পরিচালক ইবরার টিপুও উপস্থিত হয়েছিলেন ঢাকা পোস্ট কার্যালয়ে। ঢাকা পোস্টের কাছে তারা নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন, জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির জন্য শুভকামনা।
ক্রীড়াঙ্গনের বিশিষ্টজনরাও চলে এসেছিলেন শুভেচ্ছা জানাতে। যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন- জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ফুটবলার আবদুল গাফফার, কায়সার হামিদ, দেশের হকির অন্যতম তারকা রফিকুল ইসলাম কামাল, আহসান উল্লাহ ফয়সাল। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, লন্ডন ও রিও অলিম্পিক খেলা সাতারু মাহফিজুর রহমান সাগর, এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী শ্যুটার শাকিল আহমেদ, বাংলাদেশ হুইল চেয়ার দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ মুহসিন।
ঢাকা পোস্টের শুভযাত্রার আয়োজন কেবল দেশের সীমানাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশিদের খবরের কথা শুরু থেকেই মাথায় রেখেছে ঢাকা পোস্ট। আরও তাদের কথা মাথায় রেখেই সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, মালয়েশিয়াসহ আরও বেশ কিছু দেশে থাকছেন ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি। উদ্বোধনী আসরে জমকালো আয়োজন হয়েছে আরব আমিরাতে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে দুবাইয়ের বেস্ট ওয়েস্টার্ন পার্ল ক্রিক হোটেলের হলরুমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সাংবাদিক, প্রবাসী বাংলাদেশি, ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশি কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
দিনভর বর্ণাঢ্য আয়োজন ছিল সারাদেশেও। রংপুরের আয়োজনে উপস্থিত হয়েছিলেন রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি। এ ছাড়াও রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রশীদ বাবু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর মহানগর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামেও ছিল নজরকাড়া আয়োজন। কেক কেটে চট্টগ্রামে ঢাকা পোস্ট-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। উদ্বোধন শেষে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘ঢাকা পোস্টের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। সত্যটাকে খুঁজে নিতে হবে, আর মিথ্যাটাকে বর্জন করতে হবে। সাংবাদিকদের উচিত সমাজের অন্যায়গুলো সামনে তুলে ধরে আনা। আশা করি, ঢাকা পোস্ট সেই কাজটি করে যাবে। ঢাকা পোস্ট বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করবে, চট্টগ্রামের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা তুলে ধরবে। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম এগিয়ে গেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
বরেন্দ্র প্রান্তের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠুক ঢাকা পোস্ট- এমন প্রত্যাশার কথা উঠে এসেছে রাজশাহীর আয়োজন থেকে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী কলেজের রজনীকান্ত সেন মঞ্চে কেক কেটে ঢাকা পোস্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রায় সামিল হন রাজশাহীর বিশিষ্টজনেরা। এর আগে রাজশাহী কলেজের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে র্যালি বের করা হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজশাহীর গণমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের শহীদ শাহাবুদ্দিন মিলনায়তনে ঢাকা পোস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সঙ্গী হয়েছিলেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) সচিব রাজীব কুমার সরকার। এতে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রকৃত সাংবাদিকতা এবং সু-সাংবাদিকতার পরিসর আরও বিস্তৃত হোক। একটি শক্তিশালী ইতিবাচক গণমাধ্যম দেশের প্রকৃত উন্নয়ন এবং কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটাতে অনেক সহায়তা করতে পারে। এটি একদিকে যেমন জনমত গঠনে সহায়ক হয় তেমনি আগামীর পথ সুগম করতে সহায়তা করে। আমরা আশাবাদী ঢাকা পোস্ট এই কাজটি করে দেখাবে।
সিলেট সিটি করপোরেশন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন সিলেটের আয়োজনে। সিলেট নগরের জিন্দাবাজারের নজরুল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট পরিবারকে শুভেচ্ছা জানাই। আশা করি, ঢাকা পোস্ট সিলেটের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রার পাশাপাশি সমাজের নানা অসঙ্গতিকে তুলে ধরবে। ঢাকা পোস্ট-এর সফলতা কামনা করি।
বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় পাঠকের মন জয় করবে ঢাকা পোস্ট- খুলনার আয়োজনে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক। পাঠকদের মন জয়ের পাশাপাশি ঢাকা পোস্ট যেন সবার আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে সেই কামনা করেছেন তিনি। খুলনা প্রেসক্লাবে ঢাকা পোস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেক কাটা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা পোস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও ছিল বর্ণাঢ্য। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার প্রলয় চিসিম। তিনি বলেন, আমার জীবনের একটি স্মরণীয় দিন আজ। ঢাকা পোস্টের মতো বৃহৎ ও দায়িত্বশীল অনলাইন উদ্বোধনের অংশীদার হতে পেরে। গণমাধ্যমকে অনেকে অনেকভাবে ব্যবহার করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়েও অনেকে আপত্তি তোলেন।
বিভাগীয় শহরগুলো ছাড়াও দেশের প্রত্যেকটি জেলাসদরেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসব আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা পোস্টের কান্ট্রি এডিটর মাহাবুর আলম সোহাগ বলেন, ঢাকা শহরের একটি ঘটনা যত সহজে গণমাধ্যমগুলোর নজরে চলে আসে, স্বাভাবিকভাবেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর ঘটনা তত সহজে গণমাধ্যমগুলোতে জায়গা করে নিতে পারে না। আমাদের উদ্বোধনী আয়োজনে দেশের প্রত্যেকটি জেলা যেভাবে এককাতারে দাঁড়িয়ে উৎসবে সামিল হয়েছে, খবরের ক্ষেত্রেও আমরা একই নীতি বজায় রাখবো।
উদ্বোধনী দিনে দিনভর নানা আয়োজনের পাশাপাশি উদ্বোধনী ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করেছে ঢাকা পোস্ট। নবযাত্রার সারথি হোন আপনিও- শিরোনামে এতে সম্পাদকীয় লিখেছেন মহিউদ্দিন সরকার। বাংলাদেশ / স্বাধীনতা / গণতন্ত্র, গণআন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও তারুণ্য, অর্থনীতি / উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্প, আর্তমানবতা, প্রাচীন পেশা, সাহিত্য / শিশুসাহিত্য, গণমাধ্যম, নারী উদ্যোক্তা, চলচ্চিত্র, টেলিভিশন নাটক নিয়ে আলাদা বিভাগ সাজিয়ে তাতে ছিল সমাজের বিশিষ্টজনদের লেখার পসরা।
এর পাশাপাশি ‘শুরুর বাঁশি’ নামেও বিশেষ একটি সংখ্যা প্রকাশ করেছে ঢাকা পোস্টের খেলা বিভাগ। এসব নানামুখি আয়োজন ঘিরে উদ্বোধনের দিনটা একদিকে যেমন ছিল ঢাকা পোস্ট ও এর শুভাকাঙ্ক্ষিদের জন্য আনন্দ ও উৎসবের, তেমনি ছিল নতুন দিনে কোটি হৃদয়ের প্রতিধ্বনি হওয়ার অঙ্গীকার নেওয়ার সময়। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, ইতালি থেকে মালয়েশিয়া- ঢাকা পোস্টের প্রতিটি কর্মীর হৃদয়ে দিনভর বেজেছে একটিই প্রতিজ্ঞা- সত্যের সাথে সন্ধি।
এনএফ