অপসারিত দুদক কর্মকর্তা শরীফের চাকরি ফেরতের আবেদন নাকচ
অপসারিত উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) শরীফ উদ্দিনের চাকরি ফেরতের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৭ মে) ইস্যু হওয়া দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ সই করা চিঠি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আদেশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ( কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা ২০০৮ এর ৫৪(২) বিধি অনুযায়ী গত ১৬ ফেব্রুয়ারি উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। তিনি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন করেন। তার আবেদন কমিশন কর্তৃক বিবেচিত হয়নি।
এর আগে গত ১৩ মার্চ চাকরি ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বরখাস্ত হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা তার আবেদন নিষ্পত্তি করুন। আমরা এই রিট শুনানি ১৯ মে পর্যন্ত মুলতবি রাখছি। তবে চাকরি পুনর্বহাল চেয়ে মো. শরীফ উদ্দিনের আবেদন অনন্তকাল ফেলে রাখা যাবে না। এরপরই দুদক আবেদন নাকচ করে দিল।
এদিকে দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় ভবিষ্যৎ নিয়ে এক ধরনের শঙ্কায় আছে তার পরিবার। চাকরিচ্যুতির পর বৃদ্ধ মা, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শরীফ। এমন মানবিক বিবেচনায় একটি চাকরি দেওয়ার জন্য গত ২৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন তিনি।
এদিকে তিন মাসেও তার বিষয়টি সুরাহা না করা ও তাকে পুনর্বহালে ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুদকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি )। সংস্থাটির মতে, শরীফ উদ্দিন দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনসহ সরকার ও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করলেও বিশেষ গোষ্ঠী এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই চক্রই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নিজেরা পার পেতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ সই করা এক প্রজ্ঞাপনে অপসারণ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি অনুযায়ী ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা (যদি থাকে) পাবেন। কমিশনের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
চট্টগ্রাম কার্যালয়ে কর্মরত থাকাকালে বেশকিছু বড় দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. শরীফ উদ্দিন। এরপরই একাধিক মহলের রোষানলে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে।
সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি পরিবারসহ হত্যার হুমকি পান শরীফ। পরিবারসহ হত্যার হুমকি পাওয়ায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আইয়ুব খান চৌধুরী ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে সিসিটিভির ফুটেজসহ চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন।
আরএম/এসকেডি