র্যাব ও শ্রম আইন নিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ‘চাপ’ রয়েছে
র্যাব ও শ্রম আইন নিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ‘চাপ’ রয়েছে— এমন আলোচনা উঠেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে।
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে বলা হয়, শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও চাপ আছে। এজন্য ইইউর জিএসপি সুবিধা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব ইস্যুতে গভীরভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তারা লেবার রাইটস নিয়েও কথা বলছে। লেবার রাইটস নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নও কথা বলতে শুরু করেছে। এ দুটো বিষয় নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।
সংসদীয় কমিটির সুপারিশের বিষয়ে সভাপতি বলেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। যে অভিযোগগুলো রয়েছে, সেসব বিষয়ে ফ্যাক্ট অ্যান্ড ফিগার দিয়ে ক্লারিফাই করতে হবে। জানাতে হবে, এসবের কোনোটিই ইচ্ছাকৃতভাবে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের বিষয়ে যে প্রশ্নগুলো আসতে পারে, তা আরও গভীরে গিয়ে দেখতে হবে। কারণ আগামীতে তারা হয়তো লেবার ইস্যু নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও আমরা অব্যাহত আলোচনা চালিয়ে যেতে বলেছি। সেখানে আমাদের জিএসপি সুবিধাগুলো আছে, তা কিছুটা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছি।
এ দিকে র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রসঙ্গে ফারুক খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের বৈঠক হয়েছে সেখানে র্যাবের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো দেশে এ ধরনের প্রেক্ষাপটে একটি দুটি ভুল হতেই পারে। মোটামুটি আমরা বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে র্যাবের অনেক ভালো কাজ করছে। যদি কোনো ভুল করে থাকে তার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফ্যাক্ট অ্যান্ড ফিগার দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের যারা অংশ নিয়েছেন আমাদের মনে হয়েছে, তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন।
তিনি বলেন, যেকোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করলে কখনো এখনো ভুল হতে পারে। আমাদের কথা হলো, যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে, তাহলে সেটা শুধরাতে যা যা করা দরকার তা করা হচ্ছে। পৃথিবীর ৫ হাজারের ব্যক্তি গুম এর মধ্যে বাংলাদেশে ৫৬/৫৭ জন। আমাদের প্রতিবেশি দেশেও এই সংখ্যা অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয়েছে গুমের বিষয়ে তাদের কাছে স্পেসিফিক কোন তথ্য দেওয়া হলে বাংলাদেশ সরকার সেটা দেখবে। এটাও বলা হয়েছে যদি কোনো সমস্যা থাকে, সেটার উন্নতি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোতে কাজে লাগানো প্রসঙ্গে সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, দুই দেশের যারা কমন বন্ধু, আগের বৈঠকে তাদের কাজে লাগানোর কথা বলেছিলাম। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ জানিয়েছেন ভারতের সাথে কথা বলেছেন। তিনি জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য দেশের ইনফ্লুয়েন্সের জন্য আমরা ডিপ্লোমেটিক চ্যানেলে আমরা কথা বলছি।
বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মো. হাবিবে মিল্লাত।
এইউএ/ আরএইচ