আনসারদের অপরাধের বিচার করতে হবে দুই আদালত
‘আনসার ব্যাটালিয়ন আইন, ২০২২’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইনে আনসার সদস্যদের অপরাধের বিচার করতে দুই আদালত স্থাপন করার বিধান রাখা হয়েছে।
সোমবার (২৮ মার্চ) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এখানে ৩৩টি ধারা আছে। কতগুলো বিষয় রাখা হয়েছে। যেমন- মহাপরিচালক থাকবেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণে ব্যাটালিয়ন পরিচালনা করবেন। মহাপরিচালক আইনের বিধি প্রবিধি এবং সরকারের নির্দেশনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করবেন। সরকার এর সাংগঠনিক কাঠামো ও পদ নির্ধারণ করে দেবে। নিয়োগ ও চাকরির শর্তও নির্ধারণ করে দেবে।’
ব্যাটালিয়ানের কোনো সদস্য রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কোনো সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা কোনো সংবাদপত্র অথবা অন্য কোথাও তথ্য প্রকাশ করতে পারবেন না। আমাদের ডিসিপ্লিনারি আপিল বা অসদাচারণের জন্য যেমন দু ধরনের দণ্ড আছে- লঘুদণ্ড ও গুরুদণ্ড; তাদের ক্ষেত্রেও সেটা হবে। বিভাগীয় মামলায় গুরুদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগীয় সচিবের কাছে এবং লঘুদণ্ডের বিরুদ্ধে মহাপরিচালকের কাছে আপিল করা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে একটি বিশেষ জিনিস রয়েছে। সেটা হলো ব্যাটালিয়ানের কোনো সদস্যর মাধ্যমে অপরাধ সংঘটনের জন্য বিচারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে দুটি আনসার ব্যাটালিয়ান আদালত থাকবে। একটি সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ান আদালত, আরেকটি বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ান আদালত। এটা ১৮ ধারাতে রাখা হয়েছে। সাধারণ অপরাধের বিচার হবে সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ান আদালতে। বাহিনীর অস্ত্র, গোলাবারুদ, পোশাক বা যানবাহনের যন্ত্রাংশ ইত্যাদি পরিকল্পিতভাবে বিনষ্ট করার জন্য সংক্ষিপ্ত আদালতে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক ক্ষতির ক্ষেত্রে সমপরিমাণ অর্থদণ্ড করা যাবে।’
অন্যান্য অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৯০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। এটা হলো জেনারেল ক্রাইমের জন্য যেমন চুরি করা বা নষ্ট করার জন্য। আর যদি শৃঙ্খলা সম্পৃক্ত অপরাধ করে বা বিদ্রোহের চেষ্টা করে বা প্ররোচণা ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড বা মিনিমান ৫ বছরের জেল হবে। এটা হলো বিশেষ আনসার আদালতে। যেগুলো বড় অপরাধ, সেগুলোর বিচার এখানে হবে।
তিনি বলেন, এখানে আরেকটা বিষয় থাকবে। আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত যে রায় দেবেন তার বিরুদ্ধে আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল ট্রাইব্যুনাল থাকবে। এখানে তারা আপিল করতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এগুলো বাহিনীর ভেতরে যে অপরাধ, সেগুলোর জন্য। আনসারের লোক বাইরে গিয়ে মারামারি করল বা অন্য কিছু করল, সেগুলো কিন্তু নরমাল কোর্টে বিচার হবে।
এসএইচআর/জেডএস