নারীদের নিরাপত্তায় সরকারের পাশাপাশি জনসাধারণকে এগিয়ে আসতে হবে
জনস্থানে নারী ও কন্যা শিশুর উপর হয়রানি বন্ধে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালাগুলো যথেষ্ট নয়। অনলাইন প্লাটফর্মসহ জনস্থানগুলোতে নারীদের জন্য আরও নিরাপদ ও স্বস্তিকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে সম্মিলিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। চট্টগ্রামে জনস্থানে নারীর নিরাপত্তায় প্রচার অভিযান নিয়ে ডিইসি ফাউন্ডেশনের এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন।
সোমবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টায় নগরীর প্রেস ক্লাবে ডিইসি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই), তরুণদের প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলা, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মানবাধিকার কর্মসূচি এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহযোগিতায় এ সভার আয়োজন করা হয়।
এ সময় মূল উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮.২ এবং ৩৫ নম্বর অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রীয় ও জনজীবনের সবক্ষেত্রে নারীদের সমান অধিকার এবং চলাফেরার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ অনুযায়ী শ্রমবাজার ও কর্মক্ষেত্র সমান অধিকারসহ সব ধরনের জাতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে, জনস্থানে নারী ও মেয়ে শিশুদের ওপর হয়রানি বন্ধে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা গুলো যথেষ্ট নয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফিল্ড হাসপাতালের প্রধান উদ্যোক্তা ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, সরকার নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে যা বিভিন্ন সময় দৃশ্যমান হয়েছে। তাছাড়াও সাধারণ মানুষকে নারীদের চলার পথ সুগম করতে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, গণপরিবহনে নারীদের হয়রানি বন্ধে বাস গুলোর ভেতরে গাড়ির নম্বর নিশ্চিত করতে হবে এতে করে কেউ হয়রানির শিকার হলে দ্রুত নম্বর দেখে প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে পারবে।
এসময় বক্তারা বলেন, জনসমাগম স্থল ও চলার পথকে নারীদের জন্য নিরাপদ করতে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। একজন নারীর নিরাপত্তা ও চলার পথকে মসৃণ করতে হলে, অবশ্যই উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। নারীর নিরাপত্তা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ তরুণ সমাজ ও নাগরিকদের ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা দরকার বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
ডিইসি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার সোমেন কানুনগো জানান, জনস্থানে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ তরুণ সমাজ ও নাগরিকদের ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা এই অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য।
সভাপতির বক্তব্যে সোমেন কানুনগো বলেন, এই ক্যাম্পেইনের আর একটি লক্ষ্য হলো নারীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে নীতিমালার সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে তা নীতি নির্ধারকদের জানানো। যাতে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়। যার ধারাবাহিকতায় গত এক বছর ধরে ১০টি যুব সংগঠন ১০টি জেলায় এ প্রচার অভিযানটি পরিচালনা করছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ডিইসি ফাউন্ডেশনের সদস্য এমরান আহমেদ তামিম, কলি দাশ, নাইম উদ্দিন, শওকত আলী প্রমুখ।
কেএম/আইএসএইচ