ছেলে-মেয়ের স্কুলের ফি দিতে না পেরে বাবার আত্মহত্যা
‘ফুটফুটে এক ছেলে আর মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার ছিল আমার ভাইয়ের। মিরপুরের পীরেরবাগে তার ঘর ছিল এক টুকরো বেহেস্ত। করোনা এল। ধানমন্ডিতে ভাইয়ের টেইলার্সটি বন্ধ রাখতে হলো। সংসারে হানা দিল অভাব। সে সময় সুদে টাকা ধার করে সংসার চালিয়েছেন তিনি। এরপর করোনা নিয়ন্ত্রণে এলে টেইলার্স খুলতে পেরেছেন। কিন্তু সুদের টাকা আর শোধ করতে পারেননি। এমনকি ছেলে-মেয়ের স্কুলের ফিও দিতে পারছিলেন না। আজ সাধের টেইলার্সে তার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে।’
রোববার (১৩ মার্চ) ঢাকা পোস্টকে কথাগুলো বলছিলেন মোহাম্মদ আলী। তার ভাই মো. মহসিন রেজা (৩৫) রাজধানীর ধানমন্ডির ফ্যাশন অ্যান্ড লেডিস টেইলার্সের মালিক। গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় টেইলার্স থেকে যার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মুনসুর আহমেদ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে দুপুর সোয়া একটার দিকে তার ধানমন্ডির প্রতিষ্ঠান থেকে (বাসা নম্বর ৬৯/৩, রোড নম্বর ৭/এ) মরদেহ উদ্ধার করি। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বিকেলে মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিহতের আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে জানা গেছে, সকাল সোয়া নয়টার মিরপুরের পীরেরবাগের বাসা থেকে দোকানে এসেছিলেন রেজা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
নিহত রেজার ভাই মোহাম্মদ আলী জানান, রেজা মিরপুরের পীরেরবাগ পাকা মসজিদ এলাকার ৭৮/১ এক নম্বর বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। তার ছেলে নাঈম নবম শ্রেণিতে আর মেয়ে নাইমা সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। রেজার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার চিতা পুকুরিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত আলাউদ্দিন।
এসএএ/এইচকে