যানজট দিয়ে দিনের শুরু
গাবতলী থেকে শ্যামলী, আগারগাঁও, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী হয়ে গুলশানে অফিসে এসেছেন হাবিবুর রহমান। তিনি শহরজুড়ে তীব্র যানজট দেখেছেন। বৈশাখী বাসে করে আসার সময় প্রায় পুরো রুটেই যানজট পেয়েছেন। প্রতিটি সিগনাল পার হতে দীর্ঘ সময় লেগে গেছে। হাবিবুর রহমান বলেন, আজ দেরিতে অফিসে ঢুকতে হচ্ছে। যানজট দিয়েই আমাদের প্রতিটি দিন শুরু হয়।
বুধবার (২ মার্চ) দিনব্যাপীই তীব্র যানজট ছিল রাজধানীতে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ)ও সকাল থেকে যানজট। যদিও অফিস টাইমে রাজধানীজুড়ে যানজটের চিত্র প্রতিদিনের। এরই ধারাবাহিকতায় আজও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে। অন্যদিকে যাত্রীদের অভিযোগ, অফিস টাইমে গণপরিবহনের সংকট থাকে শহরজুড়ে। যে কারণে তাদের অফিস টাইমে গাদাগাদি করে বাদুড় ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা গেছে। বিশেষ করে আব্দুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দর সড়ক, খিলক্ষেত, বনানী, মহাখালী, জাহাঙ্গীর গেট, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, মিরপুর রোড, আগারগাঁও, মিরপুর, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা, প্রগতি সরণিতে যানজট তুলনামূলক বেশি বলে জানা গেছে।
উত্তরা থেকে মালিবাগ রেলগেট পর্যন্ত আসা রাইদা বাসের চালক মাসুদ মিয়া বলেন, যাত্রী নিয়ে পুরো সড়ক পাড়ি দিতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। প্রতিদিন সকালে অফিস টাইমে যানজট হয়। গতকাল খুব বেশি যানজট ছিল। আজও তেমনভাবেই যানজট শুরু হয়েছে। বিশেষ করে প্রগতি সরণি থেকে মালিবাগ রেলগেট পর্যন্ত আর ওই দিকে এয়ারপোর্ট রোডে তীব্র যানজট ছিল। এভাবে যানজট হলে আমাদের ট্রিপ কমে যায়, মালিককে জমা খরচ দিয়ে আমাদের কিছুই থাকে না। আর যানজট হলে যাত্রীও মাঝপথে নেমে যায়। চারদিক থেকে লস আমাদের।
শান্তিনগর থেকে উত্তরার দিকে যেতে আকাশ সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসে উঠেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী নাজমুল হক। তিনি বলেন, প্রতিদিন যানজট থাকে কিন্তু এর মধ্যে আমাদের মতো অফিসগামীদের আরেকটি সমস্যা আমরা বাসে উঠতে পারি না। বাসে যাত্রী বোঝাই হয়ে আসে, তাই মাঝপথ থেকে আমরা উঠতে গেলে বাদুড় ঝোলা হয়ে থাকতে হয়। এর মধ্যে পুরো সড়কজুড়ে যানজট। সবমিলিয়ে যানজট আর বিড়ম্বনা দিয়ে আমাদের দিন শুরু হয়। সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার সময়ও একই ভোগান্তি।
আজিমপুর, নীলক্ষেত থেকে ছেড়ে আসা দেওয়ান পরিবহনের একটি বাসের সহকারী (হেলপার) মকিদুর রহমানও জানান যানজটের কথা। তিনি বলেন, কোনো সড়কেই গাড়ি টানতে পারিনি। পুরো সড়কে হয় যানজট, না হয় সিগনালে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। এভাবে কোনো মতে মহাখালী পর্যন্ত এসেছি। গুলশান, বাড্ডা, প্রগতি সরণির যানজট তো বাকিই আছে। এমন যানজট দেখলেই মাঝপথে যাত্রীরা বাস থেকে নেমে যায়। এতে আমাদের লস হয় প্রতিদিনই।
যানজট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্রাফিক অ্যালার্ট নামের একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গ্রুপে আল আমীন ইউসুফ লিখেছেন, বর্তমানে ঢাকা শহর চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আমার মনে হয় সব স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির টাইম এবং অফিস টাইম চেঞ্জ করা প্রয়োজন। সব স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির টাইম সকল ৮টা থেকে এবং সব অফিস টাইম ১০টা থেকে করা হোক।
এএসএস/এসএসএইচ