পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বাংলার সমৃদ্ধির নাবিকরা
ইউক্রেনের বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রাশিয়ার রকেট হামলার ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। তবে বাকিরা নিরাপদে জাহাজের ভেতরে অবস্থান করছেন। পরবর্তী সিদ্ধান্ত সরকার থেকে যেভাবে আসবে, সেভাবেই অবস্থা বুঝে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো ধরনের সুযোগ এলে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন মো. মুজিবুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য জানিয়ে ক্যাপ্টেন মো. মুজিবুর রহমান বলেন, সর্বশেষ রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এখন রাত তাই আর কথা হয়নি। হামলায় জাহাজের নেভিগেশন গেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই মুহূর্তে তাদের জাহাজ থেকে বের করে আনা যাবে কি-না এই প্রশ্নের জবাবে শিপিং কর্পোরেশনের এই কর্মকর্তা বলেন, এ মুহূর্তে বাইরে কোনো নিরাপত্তা নেই। কেউ নিরাপত্তা দিচ্ছে না। এখনো সবাই জাহাজে আছেন। বাইরের চেয়ে জাহাজের ভেতরেই নাবিকরা বেশি নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে। জাহাজে তো পাওয়ার, জ্বালানি তেল, খাবার সবকিছুই ঠিক আছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত সরকার থেকে যেভাবে আসবে, সেভাবেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে অবস্থা বুঝে। কোনো ধরনের সুযোগ এলে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, জাহাজে যে খাবার আছে তা দিয়ে নাবিকরা এক মাস চলতে পারবেন। জরুরি অবস্থায় তা আরও বেশি দিন থাকা যাবে।
জাহাজে হামলা হলো এরপরও জাহাজ কতটুকু নিরাপদ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণ অবস্থায় নিরাপদ। অন্য কোনো সমস্যা নেই।
হামলার পরে আর কোনো ধরনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি বলে জাহাজে থাকা নাবিকদের বরাতে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ রকেট হামলার শিকার হয়েছে বুধবার রাতে। হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমানের (৩৩) মৃত্যু হয়েছে। বাকি ২৮ জন নিরাপদে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট সাজিদ হুসাইন।
বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ। এরপর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
কেএম/ওএফ