মিথ্যা ঘোষণায় আনা ১ কোটি ৬৮ লাখ শলাকা সিগারেট জব্দ
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চীন থেকে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার শলাকা বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টম গোয়েন্দা ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এই চালানে ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করেছিল পাবনার ঈশ্বরদী থানার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তিয়ানে আউটডোর বিডি কোম্পানি লিমিটেড।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞা।
কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, পাবনার ঈশ্বরদী থানার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তিয়ানে আউটডোর কোম্পানি চীন থেকে কর্টন ইয়ার্ন আনার ঘোষণায় এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। এরপর আমদানিকারকের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ অ্যাজেন্ট ক্রোনি শিপিং করপোরেশন অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করেন ২২ ফেব্রুয়ারি। পণ্যচালানটির শুল্কায়নে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইপিজেড কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট দলিলাদি দাখিল করা হলে আইপিটির সঠিকতার বিষয়ে সন্দেহ হলে বেপজা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচাই করা হয়। যাচাইয়ে গড়মিল পরিলক্ষিত হলে বিষয়টি কাস্টমের এআইআর শাখাকে জানানো হয়।
পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর শাখা পণ্যচালানটির খালাস কার্যক্রম স্থগিত করে। পরে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়।
কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞা ঢাকা পোস্টকে বলেন, কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট অ্যাজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি কন্টেনারটি ফোর্স পিডাউন করার জন্য বন্দরকে পত্র দেওয়া হয়। কাস্টম হাউসের পরিকল্পনা অনুযায়ী আজকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, সরকারের অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা ও সিএন্ডএফ অ্যাজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে পণ্যচালানটির কন্টেইনার বন্দরের ভিতরে নিয়ম অনুযায়ী খুলে এআইআর টিম পণ্য পরীক্ষা শুরু করে। পণ্যচালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি পণ্যের প্যাকেট কেটে কায়িক পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কন্টেইনারে রাখা ৮৭৯টি কার্টন শতভাগ কায়িক পরীক্ষা শেষে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার শলাকা বিদেশি সিগারেট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ওরিস ব্র্যান্ডের ১ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার শলাকা, বোনসন ব্র্যান্ডের ২ লাখ ৬০ হাজার ও ডানহিল ব্র্যান্ডের ৪ লাখ ৯০ হাজার ৭২০ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। যার আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়াও পণ্যচালানটিতে ৬২ লাখ টাকা ।
তিনি আরও বলেন, পণ্য চালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য ও উচ্চ শুল্কের পণ্য সিগারেট আমদানি করে আনুমানিক প্রায় যার মাধ্যমে ২১ লাখ ৫৭ হাজার টাকার সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়।
এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার। কাস্টমস আইনের ও বিধি অনুযায়ী কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
কেএম/আইএসএইচ