এক সপ্তাহের মধ্যে সাংবাদিক আজহারের মুক্তির দাবি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার সাংবাদিক আজহার মাহমুদেকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সাংবাদিক নেতারা এসব দাবি জানান। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিএফইউজে সভাপতি এম আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম আজিজ, বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী প্রমুখ।
সমাবেশে এম আব্দুল্লাহ বলেন, আজহার মাহমুদের অপরাধ, তিনি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতেন। সে কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন একজন শিক্ষক। সরকার যদি মনে করে, আজহার মাহমুদকে জেলে পাঠিয়ে সাংবাদিকতাকে স্তব্ধ করে দেওয়া যাবে, আমি বলব সেটা ভুল ধারণা। আদালতও সরকারের ইশারায় চলছে। তাই সেখানেও ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা করা যায় না।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অবিলম্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা সব মামলা প্রত্যাহার করুন। আজহার মাহমুদকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি দিন।
বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকদের নির্যাতন না করার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। তারপরও আজহার মাহমুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারের কাছে তার মুক্তির দাবি করতে চাই না। কারণ সরকার জানে তারা আর বেশিদিন ক্ষমতায় নেই। আমি আজহার মাহমুদের মুক্তির ব্যাপারে বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখন ফাঁসে পরিণত হয়েছে। যারা এই আইন প্রণয়ন করেছেন, তারাই একদিন এতে ফাঁসবেন। তাই দ্রুত এই আইন বাতিল করুন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারা বিশ্ব ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিপক্ষে। এ আইনে বিচারের জন্য একটিমাত্র ট্রাইবুনাল আছে। সেখানে ৯০০ এর মতো মামলা আছে, যার ৮০০টিই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। সরকার চায় না অনুসন্ধানী প্রতিবেদন হোক।
তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের পরিপন্থী। এ আইনের মাধ্যমে তদন্ত না করেই শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতেই সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাই আমরা এই আইন বাতিল এবং আজহার মাহমুদসহ গ্রেফতার সব সাংবাদিকের মুক্তি দাবি করছি।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর হারুন-উর রশীদের ২০১৯ সালে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হাজিরা দিতে মঙ্গলবার রংপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আজহার মাহমুদ। এরপর আদালত তাকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনি বর্তমানে দিনাজপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন।
এএজে/আরএইচ