টিআরপি ব্যবস্থায় অনিয়মে দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের সুপারিশ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। তাদের প্রতিবেদনে বেসরকারি টেলিভিশন বিষয়ক বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে এক সুপারিশে বলা হয়েছে, টিআরপি ব্যবস্থায় যে অনিয়ম হয়েছে, এর জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২২ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রতিবেদন জমা দেন। সেখানে সাতটি সুপারিশে তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি মালিকানায় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর লাইসেন্সের আবেদন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র এবং লাইসেন্সধারীদের অঙ্গীকারনামা পর্যালোচনায় স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এসব লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতি অনুসৃত হয়নি। এমনকি লাইসেন্স প্রাপকের কোনো পূর্বযোগ্যতা সুনির্দিষ্ট করা ছিল না। প্রধানত রাজনৈতিক বিবেচনা এবং কিছুটা ব্যবসায়িক পরিচিতির ভিত্তিতেই এসব লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। সরকারের ‘বেসরকারি মালিকানায় টেলিভিশন চ্যানেল স্থাপন ও পরিচালন নীতিমালা’য় ২.৬ তে প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স প্রদান এবং পরবর্তী সময়ে তাদের সুষ্ঠু কার্যক্রম পর্যালোচনা করে নবায়ন করার কথা বলা আছে। এ পটভূমিতে গত দেড় দশকে প্রদত্ত সব লাইসেন্স পর্যালোচনার দাবি রাখে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
যেহেতু সম্প্রচার নীতিমালায় সম্প্রচার কমিশন গঠনের কথা বলা আছে এবং সম্প্রচার লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে সুপারিশ করার দায়িত্ব সম্প্রচার কমিশনের, এবং যেহেতু গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গণমাধ্যমের সব বিষয়, অর্থাৎ সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনের জন্য বিদ্যমান প্রেস কাউন্সিল ও প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের দায়িত্ব ও ক্ষমতার সমন্বয়ে গণমাধ্যম কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে, সেহেতু বেসরকারি টিভি চ্যানেলের লাইসেন্সগুলো পর্যালোচনার দায়িত্ব গণমাধ্যম কমিশনই পালন করবে।
বিজ্ঞাপন
গ্রহণযোগ্য ও যৌক্তিক টেলিভিশনের রেটিং পয়েন্ট টিআরপি নির্ণয় ব্যবস্থা দ্রুত সময়ের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান টিআরপি ব্যবস্থায় যে অনিয়ম হয়েছে, এর জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। মিথ্যা টিআরপি প্রচারের কারণে যেসব মিডিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা ক্ষতিপূরণ চাইলে তাদের দাবি বিবেচনা করতে হবে।
টিআরপি তদারকি কার্যক্রমে অ্যাটকো, দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ও বিজ্ঞাপন অ্যাজেন্সি থেকে একজন করে তিনজন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। টিআরপি নির্ধারণ প্রক্রিয়া বেসরকারিভাবেও কোনো প্রতিষ্ঠান করতে চাইলে তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। তাদের টিআরপি ব্যবস্থা যথাযথ হচ্ছে কি না, সেটা তদারকি করবে গণমাধ্যম কমিশন।
সরকারি কোনো ঘোষণা ও বিজ্ঞাপন টেলিভিশনে প্রচারের ক্ষেত্রে ফি প্রদান করতে হবে।
সরকার কেবল অপারেটরদের এক বছরের সময় বেঁধে দিয়ে ডিজিটালাইজেশনের নির্দেশ দেবে, যাতে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো রাজস্ব পেতে পারে।
কেবল অপারেটরগুলো ডিজিটালাইজেশন হওয়ার আগ পর্যন্ত কেবল গ্রাহকের কাছ থেকে যে অর্থ আদায় করে, এর ২৫ শতাংশ মাসিক ভিত্তিতে দেশে চালু চ্যানেলগুলোকে সমহারে বণ্টন করবে।
আপ-লিংক এবং ডাউন-লিংকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কেবল লিমিটেড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে হবে। কারণ এ মাধ্যমে কোনো চ্যানেল বহির্বিশ্বে সম্প্রচার করতে পারছে না।
এএসএস/এসএসএইচ