ভুয়া ও অপতথ্য মোকাবিলায় যেসব সুপারিশ করলো সংস্কার কমিশন

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। প্রতিবেদনে ভুয়া ও অপতথ্য যাচাইয়ে গুগল, ফেসবুক, টুইটারসহ বৃহৎ প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানিগুলোর সহযোগিতা ছাড়াও ফ্যাক্ট চেকিং সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২২ মার্চ) যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন মিশন প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ।
সুপারিশে বলা হয়, প্রতিটি বার্তা কক্ষে ভুয়া ও অপতথ্য যাচাইয়ের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা বা পদ্ধতি প্রবর্তন করা প্রয়োজন। দায়িত্বপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষিত সাংবাদিকরাই এ কাজটি করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহায়তার ব্যবস্থাও থাকা দরকার। সংবাদমাধ্যমের আর্থিক সংকটের কারণে সত্যতা যাচাইয়ের কার্যক্রমে পর্যাপ্ত বিনিয়োগের সংকট মোকাবিলায় সংবাদশিল্পে বৃহত্তর ও সম্মিলিত উদ্যোগের ব্যবস্থা করার কথাও ভাবা যেতে পারে। অবশ্যই এই উদ্যোগের স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
আরও বলা হয়েছে, বৃহৎ প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানিগুলো, যেমন গুগল, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ, সমন্বয় ও দ্রুত সাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া। ফলে ওইসব প্ল্যাটফর্মে অপ-ভুয়া তথ্য চিহ্নিত হওয়া মাত্র তাদের সজাগ করা এবং তথ্য যাচাই ও অনুসন্ধানে সহায়তা দিয়ে দ্রুত সেগুলো অপসারণ ও প্রচারিত কুতথ্য/অপতথ্য/গুজব, বিভ্রান্তি নিরসন সম্ভব হবে। ভুয়া তথ্য, অপ বা কুতথ্য প্রচারের জন্য এসব বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বড় অঙ্কের জরিমানার বিধান এবং নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতায়ন ও সামর্থ্য বৃদ্ধির নজির এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
ফ্যাক্ট চেকিং সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা প্রসঙ্গে সুপারিশে বলা হয়েছে, ফ্যাক্ট চেকিংয়ের জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান ও নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে, তাদের সহায়তা নেওয়া এবং তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তবে সম্প্রতি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান বা উদ্যোগ সক্রিয় হয়েছে, যাদের সম্পর্কে সাবধানতা প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য প্রচারের জন্য নিষিদ্ধ ব্যক্তিও বাংলাদেশে ফ্যাক্ট চেকিংয়ে নিয়োজিত হওয়ার নজির রয়েছে। এ কারণে ফ্যাক্ট চেকিংয়ের ক্ষেত্রে সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।
বিজ্ঞাপন
এছাড়াও সুপারিশে ভুয়া-অপ তথ্য মোকাবিলায় জনগণকে সচেতন করা এবং বিভিন্ন কৌশল শেখানোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলেও জানানো হয়েছে, যাতে করে তারা প্রতিটি তথ্য যাচাইয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন ও গুরুত্ব আরোপ করে।
টিআই/জেডএস