দেশ গঠনে সাংবাদিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশ গঠনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশ গঠন কেমন, সেটিও একটি প্রশ্ন। পাশ্চাত্যের মতো শুধু বস্তুগত উন্নয়নই নয়, প্রয়োজন মানবিক-সামাজিক রাষ্ট্র গঠন।
তিনি বলেন, এ জন্য প্রয়োজন মানবিকতার বিকাশ, যে মানবিকতা দিনে দিনে লোপ পাচ্ছে। উন্নয়নের সঙ্গে যন্ত্রের ব্যবহারের সাথে সাথে মানুষও যন্ত্র হয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হবে সমাজকে রক্ষা করতে হলে, সেজন্য মানবিকতার উন্নয়ন প্রয়োজন।
সোমবার (২৭ জুন) বিকেলে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রয়াত সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জহুর হোসেন চৌধুরী জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটি আয়োজিত এ সভায় জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন স্বাগত বক্তব্য দেন এবং সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুল হক ভুঁইয়া ও ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন। কিন্তু এর পেছনে কিছু প্রথিতযশা মানুষ, কিছু লেখক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকদের অনবদ্য ভূমিকা না থাকলে জাতির মনন তৈরি হতো না। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন জহুর হোসেন চৌধুরী।
হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে হয়, রাজনীতিবিদদের দায়িত্ব হচ্ছে জাতিকে স্বপ্ন দেখানো। একইসঙ্গে সাংবাদিকরাও পারেন স্বপ্ন দেখাতে। আমার মতো শক্ত মনের মানুষ, যাকে শিবির দুবার জবাই করতে চেয়েছিল, ২১ আগস্ট মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি, বহুবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছি, কিন্তু সেই আমাকেও সাংবাদিকদের অনেক রিপোর্ট কাঁদায়, ভাবায়।
জহুর হোসেন চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. হাছান সাংবাদিকদের বলেন, জহুর হোসেন চৌধুরীরা যেভাবে তাদের লেখনীর মাধ্যমে সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ আজীবন লালন করে যেভাবে দেশ ও সমাজের তৃতীয় নয়ন উন্মোচন করেছেন, সমাজকে সঠিক চিন্তার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, আজকের প্রেক্ষাপটেও একটি মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধসম্পন্ন রাষ্ট্র গঠনে অবদান রেখে সেই কাজটি আপনারা করবেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার তার বক্তৃতায় সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরীর মেধা ও মননশীল সাংবাদিকতাকে সংবাদপত্র দুনিয়ায় একটি উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানি দুঃশাসনের মধ্যেও জহুর হোসেন চৌধুরী দেশে সাংবাদিকতার ভিত গড়ে গেছেন। তার কাজের মধ্য দিয়ে তিনি অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন।
সভা শেষে আয়োজক ও অতিথিবৃন্দ বিভিন্ন পত্রিকায় জহুর হোসেন চৌধুরীর কলাম লেখনীর সংকলন ‘দরবার-ই-জহুর কলাম’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। ‘আবিষ্কার’ প্রকাশিত ২৪০ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থটি সবাইকে পড়ে দেখার অনুরোধ জানান সভার সভাপতি ডা. এ কে আজাদ চৌধুরী।
এসএইচআর/আরএইচ