৮ম দিনে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ১০২ নতুন বই

চলছে বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলা। সপ্তাহ ঘুরে অষ্টম দিনে ১০৮টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। ফলে মোট প্রকাশিত নতুন বইয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬১-তে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ মেলা শুরু হয় দুপুর ২টায়। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক-শাখায় ৩৪ জন, খ-শাখায় ৬৬ জন এবং গ-শাখায় ৩৯ জনসহ সর্বমোট ১৩৯ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে।
এরপর বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘একজন মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আবদুস সেলিম এবং মোহাম্মদ হারুন রশিদ। সভাপতিত্ব করেন খালিকুজ্জামান ইলিয়াস।
প্রাবন্ধিক বলেন, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ছিলেন একাধারে শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, প্রশাসক, কবি, লেখক, অনুবাদক ও সুফিবাদ চর্চাকারী। তার লেখালেখির জগৎ বিচিত্র। তিনি ভাষা-সমাজ-শিক্ষা প্রসঙ্গে জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ যেমন লিখেছেন, তেমনি রচনা করেছেন সুখপাঠ্য ভ্রমণকাহিনি। অনুবাদের ক্ষেত্রেও তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তার লেখনি ও ভাষার অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হলো সহজবোধ্যতা ও রসবোধ। সময়ের প্রেক্ষাপটে তার চিন্তাচেতনা বেশ আধুনিক ও সময়োপযোগী ছিল, যার আবেদন বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আরও অর্থবহ হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন
আলোচকরা বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ছিলেন একজন সৎ, সাহসী, আপসহীন, ক্ষণজন্মা, মেধাবী ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ। তিনি বাংলাদেশের সুফিবাদ ও সুফি সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট লেখক। অনুবাদকর্মের পাশাপাশি সংস্কৃতি ও সাহিত্য সমালোচক হিসেবেও তিনি তার গভীর জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ছিলেন সংবেদনশীল এবং বন্ধুবৎসল একজন মানুষ। ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত স্বাধীনচেতা মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ একজন শুদ্ধ, লড়াকু এবং গভীর প্রজ্ঞাময় মানুষ হিসেবে আমাদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবেন।
সভাপতির বক্তব্যে খালিকুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা প্রচলনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী বিরল প্রকৃতির একজন মানুষ।
আজকের বইমেলায় লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি ও প্রাবন্ধিক মজিদ মাহমুদ এবং কবি জব্বার আল নাইম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি ফরিদ সাইদ এবং কবি প্রদীপ মিত্র। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী কামাল মিনা এবং ফারহানা পারভীন হক তৃণা। আজ ছিল আরিফুজ্জামান চয়নের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন উদ্ভাস নৃত্যকলা একাডেমির পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফারাহ দিবা খান লাবণ্য, সুষ্মিতা দেবনাথ সূচি, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, গার্গি ঘোষ, শার্লি মার্থা রোজারিও এবং মো. রেজওয়ানুল হক।
বইমেলার আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি
আগামীকাল রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) একুশে বইমেলার নবম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্মরণ : মাকিদ হায়দার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন চঞ্চল আশরাফ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন আসিফ হায়দার এবং সৈকত হাবিব। সভাপতিত্ব করবেন আতাহার খান।
আরএইচটি/এসএসএইচ