আবারও বাড়ছে করোনা, আপনি সতর্ক তো?
করোনাভাইরাস তার ভয়াবহ রূপ নিয়ে উপস্থিত হওয়ার দুই বছর হতে চললো। এই দুই বছরে আমরা অনেককিছুর সাক্ষী হয়েছি। অনেকে হারিয়েছি প্রিয়জন, মানসিক ও শারীরিকভাবেও হয়েছি বিধ্বস্ত। লকডাউন, কাজ হারানো, সম্পর্কের ভাঙন- অনেককিছুই সামলে আসতে হয়েছে আমাদের।
করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের পর কিছুটা স্বস্তি মিলেছিল। সংক্রমণের হার কমার কারণে মানুষেরা ফিরতেও শুরু করেছে স্বাভাবিক জীবনযাপনে। তবে আশঙ্কার কথা হলো, করোনাভাইরাস আবারও স্বরূপে ফিরতে শুরু করেছে। হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। একটু একটু করে যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছিলেন, সেটি আবারও পিছিয়ে যাবে, সন্দেহ নেই। দুঃসময়ে টিকে থাকাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। তাই যেভাবেই হোক, নিজেকে ও প্রিয়জনদের ভালো রাখতে হবে। থাকতে হবে সতর্ক।
করোনা মোকাবিলায় হেলাফেলা করলে চলবে না। প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে ফিরে এলেও আপনাকে ভুগতে হবে অনেকটা সময়। তাই যতটা সম্ভব এর সংক্রমণ থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। করণীয়গুলো ভালোভাবে মেনে চলতে হবে। এই ভাইরাস আগের মতো শক্তিশালী নেই ভেবে ভুল করবেন না। কারণ এর নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরাও পুরোপুরি জানতে পারেননি। আপনার করণীয়গুলো কী হতে পারে সেদিকে চোখ বুলিয়ে নিন-
মনোবল হারাবেন না
মানুষ তখনই ভেঙে পড়ে, যখন তার মনোবল ভেঙে যায়। তাই কোনোভাবেই মনোবল হারানো চলবে না। রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করবে আপনার শরীর, আর সব ধরনের পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে আপনার মন। আপনি মনে যত সাহস ধরে রাখবেন, অসুখ-বিসুখ ততটাই আপনার থেকে দূরে পালাবে। তাই সব পরিস্থিতিতে মন শান্ত রাখুন। মনে রাখবেন, অস্থিরতার অভ্যাস আপনাকে অনেক জায়গায়ই হারিয়ে দিতে পারে। মন প্রশান্ত রাখলে আপনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সাহস পাবেন।
সবার আগে সুস্থ থাকা
আপনার সবকিছু থাকার পরেও যদি সুস্থতা না থাকে, তবে সবই অর্থহীন হয়ে দাঁড়াবে। যদি সুস্থ থাকেন, তখন নিজের এবং প্রিয়জনের খেয়াল রাখা সহজ হবে। তাই সবার আগে নিজের যত্ন নিন। নিজের সুস্থতার প্রতি খেয়াল রাখুন। আপনি যতটুকু যত্নশীল হবেন, শরীর ঠিক ততটুকুই আপনাকে ফেরত দেবে। তাই কী করলে, কী খেলে সুস্থ থাকবেন সেই তালিকা ঠিক করে সেটি অনুসরণ করুন। কোনোভাবেই নিজের প্রতি বেখেয়ালি হবেন না। যেসব বিষয় আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে, সেগুলো জীবন থেকে মুছে ফেলুন। এখনও যদি টিকা নেওয়া না হয়ে থাকে তবে টিকা নিয়ে নিন।
শিশু ও বয়স্কদের বাড়তি যত্ন
বয়স্করাও একটা সময় শিশুদের মতো হয়ে যায়। শিশুরা যেমন নিজের যত্ন নিজে নিতে পারে না, বয়স্করাও তেমনই। তাই শুধু করোনা পরিস্থিতিতে নয়, সব সময়েই তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি। মহামারির এই সময়ে তাদের রাখতে হবে সবচেয়ে সুরক্ষিত। তাদের এই সময়ের করণীয়গুলো ভালোভাবে বুঝিয়ে বলুন। সেসব পালনে তাদের সহায়তা করুন।
নজর দিন খাবারে
এটি জরুরি একটি কাজ কিন্তু আমরা বেশিরভাগ সময়েই ভুলে যাই। করোনাসহ সব ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে খাবার প্রধান ভূমিকা পালন করে। তাই খাবারের তালিকা নির্ধারণ করা জরুরি। শুধু মুখের স্বাদের ওপর নির্ভর করে থাকবেন না। খেতে সুস্বাদু মনে না হলেও যেটি আপনার জন্য উপকারী ও কার্যকরী, সেই খাবারই খেতে হবে। সবার সব পরামর্শে কান না দিয়ে বরং বিশেষজ্ঞ কারও পরামর্শ নিন। এতে আপনার সুস্থ থাকা সহজ হবে।
এবং পরিচ্ছন্নতা
পরিচ্ছন্নতা আপনাকে অনেক রোগ থেকে মুক্ত রাখবে, একথা জানা আছে নিশ্চয়ই। যত বেশি অপরিষ্কার, তত বেশি রোগ-জীবাণু জন্মানোর ভয়। তাই নিজেকে এবং বাড়িঘর সবকিছুই পরিষ্কার রাখতে হবে। বাইরে থেকে ফিরে পরিচ্ছন্ন হয়ে নিতে হবে। সম্ভব হলে গোসল সেরে নিন। বাড়ি এবং আসবাব নিয়মিত পরিষ্কার করুন। শীতের সময়ে ধুলো জমে বেশি, তাই প্রতিদিন পরিষ্কার করুন। বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কাঁথা-কম্বল পরিষ্কার রাখুন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মেনে চললে অসুস্থতা আপনার কাছে ঘেঁষতে পারবে না।