প্রতিদিনের যে ১০ অভ্যাস কিডনির ক্ষতি করে
কিডনির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করতে সহায়তা করে। সেইসঙ্গে পানি, লবণ এবং বিভিন্ন খনিজ উপাদানের স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখতে অ্যাসিড অপসারণে সহায়তা করে। এই সুস্থ ভারসাম্য ছাড়া আমাদের স্নায়ু, পেশী এবং শরীরের অন্যান্য টিস্যু সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। তাই কিডনির যত্ন নেওয়াও আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে প্রতিদিন হয়তো অজান্তেই এমনকিছু কাজ করছেন যা আপনার কিডনির মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
অতিরিক্ত পেইনকিলার ব্যবহার
পেইনকিলার আপনার ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। কিন্তু এটি কিডনির ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে যদি কারও কিডনি রোগ থাকে। তাই একটুতেই পেইনকিলার খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া একদমই গ্রহণ করবেন না।
অতিরিক্ত লবণ খাওয়া
যেসব খাবারে লবণ বেশি থাকে, সেগুলো রক্তচাপ বাড়ায় এবং সে কারণে বাড়ে কিডনি রোগের ঝুঁকি। অতিরিক্ত লবণের পরিবর্তে আপনি ভেষজ এবং মশলা দিয়ে খাবারে স্বাদ যোগ করতে পারেন। এই অভ্যাস শুরু করলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লবণ এড়ানোর সহজ পথ খুঁজে পেতে শুরু করবেন।
প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া
প্রক্রিয়াজাত খাবারে সোডিয়াম এবং ফসফরাস থাকে। কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। উচ্চ ফসফরাসযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ কিডনি এবং হাড়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
নিজেকে হাইড্রেটেড না রাখা
হাইড্রেটেড থাকলে তা আপনার কিডনিকে শরীর থেকে সোডিয়াম এবং টক্সিন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে তা কিডনির যন্ত্রণাদায়ক পাথর এড়াতেও সাহায্য করে। যাদের কিডনির সমস্যা আছে তাদের কম তরল পান করা উচিত। কিন্তু সুস্থ ব্যক্তির প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করা উচিত।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
সার্বিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য রাতে ভালো ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনির কাজ স্লিপ-ওয়েক চক্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় যা কিডনির কাজের চাপ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমন্বয় করতে সাহায্য করে। তাই ঘুমের অভাব হলে সেদিকে খেয়াল দিন। পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস করুন।
ধূমপান
ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যারা ধূমপান করে তাদের প্রস্রাবে প্রোটিন থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে, যা কিডনি নষ্ট হওয়ার লক্ষণ। তাই সুস্থ থাকার জন্য ধূমপান বাদ দিন।
খুব বেশি চিনি খাওয়া
অত্যধিক চিনি গ্রহণ স্থূলতার কারণ হতে পারে, যা আপনার উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। আর এই দুই রোগই কিডনি রোগের কারণ হতে পারে। তাই শুধু যোগ করা চিনি নয় বরং লুকানো চিনি খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। বিস্কুট, মশলা, সিরিয়াল এবং সাদা রুটি এড়িয়ে চলুন কারণ এর সবগুলোতেই শর্করা রয়েছে। যেকোনো খাদ্য সামগ্রী কেনার আগে তার উপাদানসমূহ সম্পর্কে পড়ে নিন।
অত্যধিক অ্যালকোহল পান করা
যারা অত্যধিক অ্যালকোহ গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ হতে দেখা যায়। তাই কিডনির সমস্যাসহ আরও নানা সমস্যা থেকে বাঁচতে অ্যালকোহলকে না বলুন।
খুব বেশি মাংস খাওয়া
পশুর প্রোটিন রক্তে উচ্চ মাত্রায় এসিড উৎপন্ন করে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর এবং অ্যাসিডোসিসের কারণ হতে পারে। অ্যাসিডোসিস এমন একটি অবস্থা যেখানে কিডনি যথেষ্ট দ্রুত এসিড নির্মূল করতে পারে না।
শারীরিক ক্রিয়াকলাপ কম থাকা
খুব বেশি সময় বসে থাকা কিডনি রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলতে পারে। আপনার অলস জীবনযাপন কিডনির স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ উন্নত রক্তচাপ এবং উন্নত বিপাকে সাহায্য করে, যা কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে