কোন ত্বকে কেমন ফেস স্ক্রাব ব্যবহার করবেন
ত্বকের যত্নের অন্যতম অংশ হলো স্ক্রাব। নিয়মিত স্ক্রাব না করলে ত্বক বিবর্ণ হতে শুরু করে। স্ক্রাবিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং- এই তিন রুটিন মেনে চললে ত্বক নিয়ে আপনার আর কোনো অভিযোগ থাকবে না। তবে শুধু স্ক্রাব ব্যবহার করলেই হবে না। কারণ স্ক্রাব অনেক ধরনের হতে পারে। একেকটিতে একেক ধরনের উপাদান থাকে। তাই আপনার ত্বকের ধরন বুঝে ব্যবহার করতে হবে। নয়তো উপকার মিলবে না, বরং ক্ষতি হবে বেশি। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক, কোন ত্বকে কোন স্ক্রাব ব্যবহার করবেন-
তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী স্ক্রাব
যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ময়েশ্চারাইজার কিংবা ক্রিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে হতে হবে সচেতন। স্ক্রাব ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী স্ক্রাব ব্যবহার করতে হবে। জেনে নিন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোন ধরনের স্ক্রাব ব্যবহার করা যাবে-
* তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সবেচেয়ে ভাল স্ক্রাব হতে পারে শশা। শশার প্রায় সবটুকুই পানি। এটি মুখের অতিরিক্ত তেল দূর করে একটি সতেজ ভাব এনে দিতে পারে। সেজন্য শশা গ্রেট করে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ততা অনেকটাই দূর হবে।
* তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আরেকটি উপকারী স্ক্রাব হতে পারে নারিকেল তেল ও চিনির মিশ্রণ। সেজন্য এক টেবিল চামচ নারিকেল তেলে এক চা চামচ চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন। এরপর মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে পরিষ্কার পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
* ত্বকের তৈলাক্ততা কাটাতে সাহায্য করে টক দই। তবে এর সঙ্গে সামান্য কফির গুঁড়াও যোগ করতে হবে। টক দই ও কফির গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এরপর সেই মিশ্রণ মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ পর পরিষ্কার পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
মিশ্র ত্বকের উপযোগী স্ক্রাব
যাদের ত্বক মিশ্র তারা বেশিরভাগ সময়েই ত্বকের যত্ন নিয়ে দ্বিধান্বিত থাকে। কারণ কোন ধরনের উপাদান তাদের ত্বকের সঙ্গে মানানসই হবে, তা তারা বুঝে উঠতে পারে না। দেখা গেল, পুরো মুখ শুষ্ক কিন্তু নাকটাই শুধু তৈলাক্ত। আবার কপাল তৈলাক্ত কিন্তু মুখ শুষ্ক। আপনার ত্বকও যদি এমন মিশ্র ধরনের হয় তবে স্ক্রাব ব্যবহার করতে হবে বুঝেশুনে।
* অ্যালোভেরা অয়েল মিশ্র ত্বকের জন্য ভালো। অ্যালোভেরা অয়েলের সঙ্গে সামান্য ব্রাউন সুগার মিশিয়ে নিন। সুগার ভালোভাবে মিশে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর ত্বকে ব্যবহার করুন। হালকা ম্যাসাজ করে দুই-তিন মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। দিনে দুইবার এভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
* মিশ্র ত্বকের জন্য আরেকটি উপকারী উপাদান হতে পারে মুলতানি মাটি। মুলতানি মাটির সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল এবং ঠান্ডা গোলাপ জল মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন। এটি মুখে খুব ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ রেখে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
* আপনি যদি ত্বকের যত্নে নিয়মিত মসুর ডাল ব্যবহার করেন তবে সেটি আপনার মিশ্র ত্বকের ক্ষেত্রে উপকার বয়ে আনবে। মসুর ডাল ব্লেন্ড করে বা পাটায় ভালোভাবে বেটে নিন। ঘন পেস্টের মতো তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
শুষ্ক ত্বকের উপযোগী স্ক্রাব
মৃত কোষ এবং ময়লা জমে থাকার কারণে ত্বক শুষ্ক হতে থাকে। শুষ্ক ত্বকের যত্নেও সব ধরনের উপাদান ব্যবহার করা যাবে না। ত্বকের মৃত কোষ ও জমে থাকা ময়লা দূর করতে বেছে নিতে পারেন কিছু স্ক্রাব।
* ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে ব্যবহার করুন আমন্ড ও নারিকেল তেল। নারিকেল তেলের সঙ্গে আমন্ড মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার সেটি স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করুন।
* শুষ্ক ত্বকের যত্নে দারুণ কাজ করে টমেটো। পাকা দেখে একটি টমেটো নিয়ে সেখান থেকে দুই টেবিল চামচের মতো পাল্প নিন। তার সঙ্গে মেশান সমপরিমাণ দই আর লেবুর রস। এবার ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে ভালোভাবে স্ক্রাব করে নিন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
* ত্বকের মৃত কোষ তুলে ফেলার জন্য ব্যবহার করুন বেকিং সোডা। শুধু বেকিং সোডা নয়, এর সঙ্গে মেশান মধু ও লেবুর রস। এটি স্ক্রাব হিসেবে ভালো কাজ করবে।