বর্ষায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যা খাবেন
শারীরিক প্রক্রিয়া সক্রিয় রাখতে শরীরকে হাইড্রেট রাখা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বর্ষার স্যাঁতস্যাঁতে আমেজে পানি পান অনেকটাই কমে যায়। ফলে শরীরে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল এবং অন্যান্য পানীয় গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাহলে চলুন জেনে নিই বর্ষায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যা যা খেতে পারেন-
হট কোকো
সম্প্রতি একটি গবেষণা অনুসারে, কোকোতে প্রচুর পরিমাণে ফেনোলিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। খাদ্যতালিকায় যদি ১০ শতাংশের মতো কোকো থাকে, তবে অ্যান্টিঅক্সিডেটিভ এবং ইমিউনোমোডুলেটরি প্রভাব সরবরাহ করতে পারে এবং বর্ষাকালে সংক্রমণ ও রোগ জীবাণু থেকে দূরে রাখতে পারে।
মশলা চা
চা এই অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় পানীয়। সকাল হোক বা সন্ধ্যা, চা প্রেমীরা দিনে প্রায় চার-পাঁচ কাপ চা অনায়াসেই পান করতে পারে। আর চায়ের মধ্যে মশলা চা একটু বেশিই জনপ্রিয়। মশলা চা কেবলমাত্র সুস্বাদুই নয়, এর মধ্যে আছে অনেক ঔষধি গুণ। এ চায়ে মূলত দারুচিনি, ছোট এলাচ, আদা, গোলমরিচ এবং লবঙ্গ থাকে। এগুলি শরীরের ইমিউনিটি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে, যা বর্ষাকালে খুবই প্রয়োজন।
লেবু-আদা চা
বর্ষাকালে মজাদার লেবু-আদা চা, মনকে সতেজতায় ভরে তোলে। লেবু-আদা চায়ে থাকা লেবু এবং আদা উভয়ই বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। স্বাদ বাড়াতে চাইলে, এক চামচ মধুও যোগ করা যেতে পারে। এই চায়ের প্রতিটি উপকরণই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।
সিনামন স্পাইসড সিডার
দারুচিনি ও অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের মিশ্রণে গরম পানীয়টি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর। এ পানীয় হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তুলতেও চমৎকার কাজ করে। অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে থাকা বিভিন্ন ফাইটোকেমিক্যালস এবং দারুচিনিতে থাকা কার্টিন শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই পানীয়টি ওজন কমাতে, গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রণ করতে এবং বর্ষাকালে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখতে সক্ষম।
হলুদ দুধ
হলুদ দুধ গোল্ডেন মিল্ক নামেও জনপ্রিয়। হলুদের গুণ সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। এই হলুদ গরম দুধের সাথে মিশিয়ে পান করা হলে, তা স্বাস্থ্যের জন্য আরও উপকারী হয়ে ওঠে। এই পানীয়টি কেবল বর্ষাকালের জন্যই ভাল নয়, সব সিজনেই এটি খাওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পানীয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং বর্ষায় বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি কোভিড-১৯ থেকেও আমাদের সুরক্ষিত রাখতে পারে।
কেশর দুধ
অনেকেই এই পানীয়টিকে গোল্ডেন মিল্ক এর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন, যেহেতু রঙ অনেকটা একইরকম হয়। এই পানীয়টিও অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। কেশর বা জাফরানে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ বর্তমান, যা ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি-কাশি এবং জ্বরের ঝুঁকি রোধ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, এটি স্নায়ুতন্ত্রের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও দুর্দান্ত কাজ করে।
মশলাদার আমন্ড মিল্ক
উষ্ণ, মিষ্টি এবং আরামদায়ক মশলাযুক্ত আমন্ড মিল্কে দারুচিনি, মধু, হলুদ, এলাচ, জায়ফল এবং ভ্যানিলা জাতীয় উপাদান মিশ্রিত থাকে। এই উপাদানগুলি আমন্ড মিল্কের সাথে ভাল করে ফুটিয়ে মশলাদার আমন্ড মিল্ক তৈরি করা হয়। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পানীয়, যা বর্ষায় আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।