ডাবের শাঁস খেলে কী হয়?
ডাবের পানির অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। সুস্বাস্থ্য কিংবা উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ডাবের পানি বেশ উপকারী। প্রচণ্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতেও এর জুড়ি নেই। প্রাকৃতিক পানীয় বলে এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। আমাদের শরীরে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের অভাব হলে তা পূরণ করার জন্য ডাবের পানি পান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। বিশেষ করে জন্ডিস, কলেরা বা ডায়রিয়ার রোগীদের বেশি খেতে দেওয়া হয় ডাবের পানি। এটি শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে।
অনেকেই আছেন যারা ডাবের পানিটুকু খেয়ে ভেতরের শাঁসটা ফেলে দেন। ডাবের শাঁসকে অনেকে মালাইও বলে থাকেন। এটি তেমন কাজের নয় মনে করেই ফেলে দেওয়া হয়। তবে সত্যিটা জানলে এবার থেকে আর ডাবের শাঁস ফেলবেন না। কারণ এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম ডাবের শাঁসে আছে ৩৫৪ ক্যালরি, ৩৩ গ্রাম ফ্যাট, ২০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৩৫৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ৩.৩ গ্রাম প্রোটিন। এছাড়াও আছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি-৬ ও বি-১২। জেনে নিন ডাবের শাঁস আমাদের জন্য কতটা উপকারী-
ডাবের পানির মতোই উপকারী
ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় থেকে অনেকেই ডাবের শাঁস ফেলে দেন। এর কারণ হলো এতে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। কিন্তু ডাবের শাঁসের রয়েছে অনেকগুলো উপকারিতা। ডাবের পানি, নারিকেল তেল কিংবা নারিকেলের দুধের মতোই ডাবের শাঁসও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সমান উপকারী।
ডাবের পানির পুষ্টি
আপনি যদি প্রতিদিন ডাবের পানি পান করেন তবে শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হবে না। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতেও সমান কার্যকরী। ডাবের পানি শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি ভালো রাখে ত্বক ও চুল। এতে থাকা পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং ভিটামিন সি জাতীয় পুষ্টি আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। ফ্যাট, চিনি এবং কোলেস্টেরল কম থাকায় এটি পান করা নিরাপদ।
ওজন কমাতে সাহায্য করে ডাবের শাঁস
অনেকের ধারণা হলো, ডাবের শাঁস খেলে তা ক্যালোরি বাড়িয়ে তোলে। আপনি যদি পরিমিত খান তাহলে আর ভয় নেই। এতে শরীরে ফ্যাট জমে না বা ওজনও বাড়ায় না। ডাবের শাঁস দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বারবার ক্ষুধা লাগে না। তাই বারবার খাওয়ার প্রয়োজনও হয় না। তাইতো ওজন বৃদ্ধির ভয় থাকে না।
হজমে সাহায্য করে
অনেক ধরনের খাবার রয়েছে যা খেতে সুস্বাদু হলেও হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। ডাবের শাঁসের ক্ষেত্রে এমন কোনো সমস্যা নেই। বরং ডাঁবের শাঁস খেলে তা হজমে সাহায্য করে। এতে থাকে প্রচুর ফাইবার যা হজমক্ষমতা শক্তিশালী করার পাশিপাশি অন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য উপকারী হতে পারে ডাবের শাঁস। কারণ ডাবের শাঁস রক্তের ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি রোধ করে, হাড় শক্ত করে, মানসিক চাপ কমায়, দাঁত ভালো রাখে। এমনকী কিডনি ভালো রাখতেও কাজ করে ডাবের শাঁস। উপকারিতা তো জেনে নিলেন, এবার থেকে নিশ্চয়ই ডাবের শাঁস ফেলে দেবেন না!
এইচএন/এএ