অফিসে কারও ওপর ক্রাশ খেয়েছেন? জেনে নিন কী করবেন
অফিস হলো কাজের জায়গা। নিজস্ব আবেগ-অনুভূতি সেখানে বেশ হিসাব-নিকাশ করে প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু মানুষের মন তো সব সময় মানুষের কথা শুনে চলে না। অফিসে হয়তো এমন কেউ থাকতে পারে যার প্রতি আপনার একটু অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। কিন্তু ওই যে বললাম, অফিস হলো কাজের জায়গা, প্রেম-ভালোবাসাকে সেখানে খুব একটা ভালো চোখে দেখা হয় না। এর পেছনে যৌক্তিক অনেক কারণও রয়েছে। সে প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। ধরুন, অফিসে কারও প্রতি আপনার ভালোলাগা কাজ করছে তখন আপনি কী করবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. অনুভূতিকে স্বীকার করুন
আপনার আবেগকে এড়িয়ে যাবেন না। মনে রাখবেন, মানুষ মাত্রই আবেগ থাকবে। এটি অস্বীকার করা যায় না। আবেগকে এড়িয়ে গেলে বরং সমস্যা আরও বাড়বে। তাই অফিসে কারও প্রতি ক্রাশ অনুভব করলে তা সহজভাবে মেনে নিন। এটি হতেই পারে। স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে মেনে নিন কিন্তু আপনার কর্মজীবনে তার প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। এই অনুভূতি ক্ষণস্থায়ী মোহ কি-না বা এটি আপনার পেশাদার পরিবেশের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে কি-না তা বুঝতে কিছুটা সময় নিন।
২. পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন
পেশাগত ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব বজায় রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অনুভূতি তৈরি হোক, তবে ব্যক্তিগত বিষয়গুলোকে আপনার কর্মক্ষেত্রের মিথস্ক্রিয়া থেকে আলাদা রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কাজের নৈতিকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে এমন কাজ এড়িয়ে চলুন। যদি খুব বেশি তার আশেপাশে থাকতে ইচ্ছা হয় তবে কাজ নিয়েই থাকুন। অফিসের এমন সব কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন যেগুলো করলে তার আশেপাশে থাকা যায়।
আরও পড়ুন
৩. যোগাযোগ কমিয়ে দিতে পারেন
যদি আপনার মনে সাহস না হয় তবে যতটা সম্ভব তার আশেপাশে যাওয়া বন্ধ করুন। সহজ কথায় তাকে এড়িয়ে চলুন। স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুন। যদি সম্ভব হয় অফিসের শিফট বদলে নিতে পারেন। এতে তার সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ কম হবে। তাতে তাকে ভুলে থাকা সহজ হবে। এতে আপনার সাময়িক কষ্ট হলেও পরবর্তীতে তা সুফল বয়ে আনবে। তবে আপনি যদি নিশ্চিত হন যে আপনার তাকেই প্রয়োজন, তাহলে ভিন্ন কথা।
৪. বিশ্বস্ত সহকর্মীদের কাছে বলতে পারেন
যদি মনে হয় আপনি আবেগের সাগরে ডুবে যাচ্ছেন তাহলে বিশ্বস্ত সহকর্মীদের কাছ থেকে পরামর্শ চাইতে পারেন। আপনি যাকে বিশ্বাস করেন তার সঙ্গে আপনার কথাগুলো শেয়ার করতে পারেন। অফিসে বা অফিসের বাইরের বন্ধু হোক, পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা আপনাকে সুপরামর্শ দিতে পারে। তাদের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি আপনাকে এই দোটানা থেকে মুক্ত করতে পারে। মনে রাখবেন, তাদের অন্তর্দৃষ্টি একটি কম্পাসের মতো যা আপনাকে আবেগের গোলকধাঁধায় পথ দেখাবে।
৫. কাজে মনোযোগ দিন
কাজে মনোযোগ দেওয়ার বিকল্প নেই। এতে আপনি দুইভাবে লাভবান হবেন। আপনার ক্রাশের প্রতি অনুভূতিগুলো নিয়ে ভাবার জন্য সময় কম থাকবে আবার কাজেরও অগ্রগতি হবে। কাজ করতে করতে আপনি সঠিক পথের সন্ধানও পেয়ে যেতে পারেন। নিজের অবস্থান ও করণীয় সম্পর্কেও তখন বুঝতে পারবেন। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। এটি আসলে কোনোকিছু থেকে পালিয়ে আসা নয় বরং সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটু সময় নেওয়া এবং সেই ফাঁকে নিজেকেও কিছুটা পরিণত করা।
৬. সবদিক ভেবে তারপর জানান
আপনার অনুভূতিগুলো যদি একইরকম থাকে তাহলে তা কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে। তাই নিজের ক্যারিয়ারের দিকটাও ভাবুন। যদি মনে হয় যে তাকে জানিয়ে দেওয়া উচিত, তাহলে জানিয়ে দিন। তবে তার আগে সবদিক বিবেচনা করে নিন। সে বিষয়টি কতটা গোপন রাখবে তা নিশ্চিত হয়ে নিন। হতে পারে সে আপনাকে ফিরিয়ে দেবে বা আপনার কাছ থেকে সময় নেবে, যাই হোক, বিষয়টি যেন সে গোপন রাখে সেদিকে খেয়াল রাখুন। নয়তো অফিসে অস্বস্তি বা জটিলতা তৈরি পারে। যদি এ ধরনের কোনো ভয় থাকে তবে মন যতই আকুলি-বিকুলি করুক না কেন, তাকে বলা থেকে বিরত থাকুন।