বয়স ৩০ হলে যে অভ্যাসগুলো বাদ দেবেন
বয়স যখন ত্রিশ বছর হওয়ার মাইলফলকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আপনার যাত্রায় বাধা হতে পারে এমন অভ্যাসগুলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। আমাদের কিছু আচরণ যা বেশিরভাগ সময়েই উপেক্ষা করা হয়, সেগুলো আসলে আপনার সফলতার পথেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সচেতনভাবে সেই অভ্যাসগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে। এতে আপনি জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ে পরিপূর্ণ অস্তিত্বের পথ তৈরি করতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বয়স ৩০ পার হলেই কোন অভ্যাসগুলো থেকে আপনাকে সরে আসতে হবে-
১. অবাস্তব জগতে বিচরণ
ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন কেনাকাটা ইত্যাদির মাধ্যমে তাত্ক্ষণিক তৃপ্তির লোভ আপনাকে একটি চক্রের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই অভ্যাসগত আচরণ বেশিরভাগ সময় দীর্ঘস্থায়ী হতাশা নিয়ে আসতে পারে। এগুলোতে জড়িয়ে গেলে কোনটি প্রয়োজন, কোনটি নয় তা আমরা ঠিকভাবে বুঝতে পারি না। এর থেকে বেড়িয়ে আসতে চাইলে শখের কোনো সৃজনশীল কাজ করুন, নিজের কর্মদক্ষতা বাড়ান। যা আপনাকে সত্যিকারের আনন্দ দেবে। জীবনকে অর্থবহ করতে চাইলে ত্রিশের পরে অবশ্যই আপনাকে ক্ষণস্থায়ী আনন্দের পেছনে ছুটে বেড়ানো বন্ধ করতে হবে।
২. ঝুঁকি নিতে ভয় পাওয়া
ব্যর্থতার ভয় আপনাকে নতুন দিগন্তের অন্বেষণ থেকে বিরত রাখে। যদিও অত্যধিক ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়, তবে ছোটখাটো ঝুঁকি তো নিতেই হবে। আপনাকে বুঝতে হবে যে মস্তিষ্ক আপনাকে রক্ষা করার জন্য মিথ্যা বলার চেষ্টা করছে। সমস্ত ঝুঁকি ব্যর্থতায় শেষ হয় না। একটি সঠিক ক্ষেত্রে ঝুঁকি গ্রহণের মনোভাব গড়ে তোলার অনেক সুফল রয়েছে। সম্ভাব্য ফলাফলের মূল্যায়ন করুন, অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিন এবং ব্যর্থতাকে মূল্যবান পাঠ হিসেবে ব্যবহার করুন। অনিশ্চয়তাকে আলিঙ্গন করা এবং কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসা স্থিতিস্থাপকতাকে উৎসাহিত করে এবং মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তৈরি করে। তাই বয়স ৩০ পার হলে ঝুঁকি নিতে ভয় পাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন।
আরও পড়ুন
৩. নিজেকে ভিকটিম মনে করা
জীবনে সমস্যা থাকবেই। সেজন্য সব সময় অন্যদের দায়ী করবেন না। বিশেষ করে যখন আপনার বয়স ৩০ পার হয়ে যাবে তখন এ বিষয়ে আপনাকে আরও ভাবতে হবে। সমস্যাগুলোর উৎস আসলে কোথায় এবং তা সত্যিই সমস্যা কি না তা ভেবে দেখুন। নিজেকে সব ক্ষেত্রে ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করা বন্ধ করুন। এটি আপনাকে আরও দুর্বল হিসেবে উপস্থাপন করে। কিছু সমস্যার দায় নিজের ওপরও নিতে শিখুন। ভুল হলে তা স্বীকার করার অভ্যাস করুন। এতে আপনিই লাভবান হবেন।
৪. সবকিছুতে পারফেক্ট হওয়ার চেষ্টা
সবকিছুতে পারফেক্ট হওয়ার চেষ্টা আপনাকে কোনোকিছুতেই ঠিকভাবে সফল হতে দেবে না। এটি আপনার চাপ এবং উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। পারফেক্ট হওয়ার চেয়ে নিজের অগ্রগতিকে অগ্রাধিকার দিন। নিজেকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করুন। পারফেক্ট হতে না পারলেও সমস্যা নেই। ভুল হলে তা গ্রহণ করার মানসিকতা রাখুন। কারণ ভুলও আমাদের জীবনের অংশ। কোনো মানুষই শতভাগ পারফেক্ট নয়। তাই কারও মনের মতো হওয়ার বদলে নিজেকে ভালো রাখার অভ্যাস করুন। নিজের ওপর অযথা চাপ প্রয়োগ করবেন না। সবাই সবকিছু হওয়ার জন্য পৃথিবীতে আসে না। তাই নিজেকে সবকিছুতেই সেরা হিসেবে দেখতে চাওয়ার প্রয়োজন নেই। বয়স ত্রিশ পার হলে বিষয়টি আরও বেশি মেনে চলতে হবে।
৫. মাল্টিটাস্কিং
মাল্টিটাস্কিংকে দক্ষতার প্রতীক হিসাবে দেখা হয়। কিন্তু মজার বিষয় হলো এটি আমাদের উৎপাদনশীলতাকে বাধা দিতে পারে! একই সঙ্গে একাধিক কাজ সম্পাদন করতে হলে আমাদের মস্তিষ্ককে সংগ্রাম করতে হয়। এটি চাপ বাড়ায় এবং কাজে মনোযোগ কমিয়ে দেয়। একই সময়ে কেবল একটি কাজে মনোযোগ দিতে পারলে তা উৎপাদনশীলতা এবং সৃজনশীলতা বাড়িয়ে দেয়। এটি জীবনকে ভারসাম্যপূর্ণ করে। বয়স ৩০ পার হলে তাই মাল্টিটাস্কিং-এর অভ্যাস বাদ দিতে হবে।