কাপড় থেকেও ছড়ায় করোনাভাইরাস
বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মহামারির কারণে আমাদের জীবনযাত্রা আবার কবে স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না। তাই করোনাকে মেনে নিয়েই আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন করতে হবে। সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার বিকল্প নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য পোশাকের বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত।
কাপড়ে কতক্ষণ বেঁচে থাকে করোনাভাইরাস
কাপড়ে করোনাভাইরাস কত দিন বাঁচে সে বিষয়ে এখন অবধি গবেষণা হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একেক কাপড়ে করোনাভাইরাসের স্থায়িত্বের সময় একেক রকম হয়।
ভারতের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘জামাকাপড়ে মোটামুটি দুই থেকে তিনদিন অবধি করোনাভাইরাস থাকে। তবে সুতি কাপড়ে সর্বাধিক ৯৬ ঘণ্টা স্থায়ী হয়। সিল্ক, শিফন, জর্জেটেও করোনার বেশি সময় ধরে অবস্থান করে। নাইলন কাপড়ে সর্বাধিক ৭২ ঘণ্টা করোনাভাইরাস স্থায়ী হয়। তবে প্লাস্টিক ও ধাতব বস্তুতে করোনাভাইরাস বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারে না। পোশাকের কোথাও প্লাস্টিক বা ধাতব বোতাম থাকলে করোনাভাইরাস সর্বাধিক ৭২ ঘণ্টা অবধি বেঁচে থাকে।’
পোশাক পাল্টে হাত ধোন
করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে তার নাক ও মুখ দিয়ে ড্রপলেট বের হয়। তা অন্যজনের শরীরে বা পোশাকে পড়লে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শ করা কোনো জিনিস ধরলেও করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। পোশাকে লেগে থাকা জীবাণু হাতের মাধ্যমে চোখ, নাক ও মুখে প্রবেশ করে। এক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। ঘরে ফিরে পোশাক বদলে ফেলতে হবে। সেটি কখনোই কারও হাতে দেওয়া যাবে না। পোশাক পাল্টানোর সময় মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঘরোয়া পোশাক পরে হাত না ধুয়ে অন্য কোনো পোশাক বা জিনিসে হাত দেওয়া যাবে না। তাৎক্ষণিকভাবে পোশাক পরিষ্কার করা সম্ভব না হলে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে রাখুন। এভাবে ছোট ছোট সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে করোনা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।
কাপড় ধোয়ার উপায়
ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার সময় পানির তাপমাত্রা সর্বোচ্চ রাখুন। কাপড় ধোয়ার গুঁড়া সাবান ভাইরাস মেরে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাপড় ধোয়ার আগে ২০ মিনিট সাবান মেশানো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। কাপড় ধোয়া শেষ হলে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
ভেজা কাপড়ে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি
কাপড় শুকানোর জন্য পর্যাপ্ত সূর্যের আলো রয়েছে এমন স্থান বেছে নিন। পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ার পরেই কাপড় তোলা উচিত। কারণ কাপড় অল্প ভেজা অবস্থায় থাকলেও করোনাভাইরাসের জীবাণু রয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অন্যদিকে লন্ড্রিতে কাপড় আয়রন করতে দিলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়।
জুতা থেকেও ছড়াতে পারে করোনা
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পোশাক ছাড়াও জুতার মাধ্যমেও করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। এর থেকে মুক্তি পেতে বাড়ির ভেতরে বাইরের জুতা ঢোকাবেন না। যদি একান্তই সম্ভব না হয় তাহলে জুতা বা স্যান্ডেলে জীবাণুনাশক স্যানিটাইজার স্প্রে করুন।
আরও সতর্কতা
পোশাকে লেগে থাকা করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করলেও ত্বক ও চুলে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। তবে সেগুলো ঠিক কতক্ষণ স্থায়ী হয় সেটি এখন অবধি প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। ত্বক ও চুলে থাকা করোনাভাইরাস থেকে নাইলনের ক্যাপ ব্যবহার করা উচিত এবং ঘরে ফিরে শ্যাম্পু করুন।
এইচএকে/এএ