রাতে দেরি করে খেলে কী হয়?
আমরা সবাই জানি যে স্বাস্থ্যকর রুটিন দিয়ে দিন শুরু করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সকালটা সুন্দরভাবে শুরু হলে তা আপনাকে সারাদিন ফিট এবং শক্তিশালী থাকতে সাহায্য করবে। কিন্তু আপনি কি কখনও আপনার দিনটি সঠিকভাবে শেষ করার গুরুত্ব বিবেচনা করেছেন? এটি আমরা খুব কমই করি, এবং সেখানেই ভারসাম্য ভেঙে যায়! স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো দিনটি কীভাবে কাটান তা আপনার সামগ্রিক জীবনধারাকে সংজ্ঞায়িত করে, এর ভেতরে রাতের খাবার এবং কাজগুলোও রয়েছে। তাই সঠিক সময়ে রাতের খাবার খাওয়ার গুরুত্ব জানা জরুরি।
বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এর পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণরূপে উপভোগ করার জন্য সঠিক সময়ে সঠিক ধরনের খাবার খাওয়ার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। এই তত্ত্বটি রাতের খাবারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, কারণ এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি (সার্কডিয়ান রিদম নামে পরিচিত) নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যা আপনার খাদ্য, ঘুমের ধরণ এবং বাহ্যিক পরিবেশের সাথে খাপ খায়। এটি আমাদের হজম, বিপাক এবং অন্যান্য শারীরিক ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করে। জেনে নিন রাতের খাবার রাতে দেরি করে খেলে কী হয়-
হজমে সমস্যা
ঘুমানোর প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। ঘুমানোর ঠিক আগে খাবার খেলে তা কার্যকর হজমে বাধা দেয়, যার ফলে ফোলাভাব, অ্যাসিডিটি এবং আরও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমের অন্তত তিন ঘণ্টা আগে হালকা রাতের খাবার খেলে তা হজমে সহায়তা করে। আমরা যত পরে খাই, খাদ্য অন্ত্রে দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা তত বাড়ে, হজমে ব্যাঘাত ঘটায়।
ওজন কমাতে বাধা দেয়
খাবারের রুটিন নিয়ন্ত্রিত হলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। দুই বেলার খাবার গ্রহণের মধ্যে নির্দিষ্ট ব্যবধান রেখে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। এই সময়ে পেট খালি থাকলে তা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে কাজ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরকে কার্যকরভাবে ক্যালোরি পোড়াতে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; অন্যথায়, অব্যবহৃত ক্যালোরি চর্বি হিসাবে জমা হতে পারে, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়।
ঘুম নষ্ট করে
ঘুমানোর ঠিক আগে খাবার খেলে পেট ভরা লাগবে। যার ফলে পেট ফাঁপা, বুকজ্বালা, অ্যাসিডিটি এবং বদহজম হয়। এই অস্বস্তি ভালোভাবে ঘুমাতেও দেয় না। রাতে দেরি করে খেলে তা আপনার শরীরকে একটি উচ্চতর সতর্ক অবস্থায় রাখে, যা সার্কাডিয়ান রিদমকে ব্যাহত করে।
রক্তচাপ বাড়াতে পারে
পুষ্টিবিদদের মতে, ঘুমের কিছুক্ষণ আগে কার্ব-সমৃদ্ধ খাবার খেলে তা শরীরের পটাসিয়াম-সোডিয়ামের ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। তিনি পরামর্শ দেন, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে ওটস, ব্রাউন রাইস এবং লাল আটার রুটির মতো জটিল কার্বোহাইড্রেট বেছে নেওয়া উচিত, বিশেষ করে রাতের খাবারে।
হার্টের সমস্যা
উচ্চ রক্তচাপ কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই স্বাস্থ্যকর রক্তচাপ এবং হার্টের কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য সুষম রাতের খাওয়া উচিত। রাতে সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডাল, পাপড় এবং মাংস খেলে তা হার্টের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।